ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রফতানি উন্নয়নে বিদেশে কর্মরত মিশনগুলো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ তৎপরতার নির্দেশও কোন ফল দিচ্ছে না। এর ফলে দীর্ঘদিন থেকে দেশের রফতানি খাত গতানুগতিক দেশের মধ্য আটকে আছে। নতুন নতুন দেশে ব্যবসায়িক পরিসর বাড়াতে মিশনগুলো বিশেষ কোন সহযোগিতা করতে পারছে না ব্যবসায়ীদের। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এসব জানা গেছে।

জানা গেছে, মোট ৫৭টি মিশনের মধ্যে নতুন অর্থবছরের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ২৫টি মিশনে। আর নেতিবাচক ধারায় থাকা ৩৬টি বাণিজ্যিক মিশনের মধ্যে ৩০টিতে আয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জুলাই মাসে রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩২০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২৫৩ হাজার কোটি ৪৩ লাখ ডলার।

সাধারণত দেশের রফতানি আয়ে বড় ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা বৈদেশিক মিশনগুলো। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ৫৭টি মিশন রয়েছে। রফতানির ৯৮ শতাংশেরও বেশি আয় হয় এসব মিশনের আওতায় থাকা অঞ্চলগুলো থেকে। তবে আয় কমে যাবার পেছনে সারা বিশ্বে অঘোষিত নীরব মন্দাকে দায়ি করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া রানা প্লাজা ধসের পরে বেশকিছু বায়ার ব্র্যান্ড বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের ব্যবসা বন্ধ না করলেও সম্প্রসারণ করেনি। এটিও রফতানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে তাদের মত।

রফতানিকারকদের সংগঠন ইএবির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, গতানুগতিক দেশের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রফতানি খাত। মিশনগুলো এই কাজে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে পারে। কোন দেশে কখন কোন ধরনের পণ্যের উপযোগিতা ও চাহিদা রয়েছে, সেটা তারা খুঁজে বের করে সে মোতাবেক ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিতে পারে। তাহলেই সফলতা আসবে। ৫৭টি মিশনের মধ্যে ২১টি মিশন রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে। আর ব্যর্থ হয়েছে ৩৬টি মিশন। এর মধ্যে ৩০টি মিশনের রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এগুলো হলো- ওয়াশিংটন, কুয়ালালামপুর, প্যারিস, মস্কো, তাসখন্দ, ভিয়েনা, কোপেনহেগ, কায়রো, বাগদাদ, ম্যানিলা, লিসবন, টোকিও, কাঠমান্ডু, ইসলামাবাদ, রিয়াদ, কলোম্ব, বার্লিন, সিঙ্গাপুর, ক্যানবেরা, ব্রাসেলস, অটোয়া, ইয়াঙ্গুন, দুবাই, থিম্পু, ত্রিপোলি, প্রিটোরিয়া, দোহা, রোম, রাবাত, স্টোকহোম, হ্যানয় ও সিউল।

অন্যদিকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রফতানি আয় করতে পারা ২৫টি মিশন হলো- বেইজিং, মস্কো, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, কায়রো, ভিয়েনা, এথেন্স, হংকং, বাগদাদ, রোম, বইরুত, পোর্ট লুই, রাবাত, হেগ, মাস্কাট, ম্যানিলা, লিসবন, কোপেনহেগেন, রিয়াদ, কলম্বো, কাঠমান্ডু, ইসলামাবাদ, ব্যাংকক, তাসখন্দ ও ওয়ার্সো। যদিও এ মিশনগুলোর অধিকাংশই অপ্রচলিত ও ছোট বাজার।

এ ছাড়া ১৮টি ইউংয়ের মধ্যে শুধু ৬টি উইং তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে। এগুলো হলো- ব্রাসেলস, অটোয়া, তেহরান, মাদ্রিদ ও লন্ডন। আর ব্যর্থ হওয়া ১২টি উইংসহ মোট ১৬টির রফতানি আয় আগের বছরের এ সময়ের চেয়ে বেশি হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ক্যানবেরা, ব্রাসেলস, অটোয়ার, বেজিং, প্যারিস, বার্লিন, তেহরান, টোকিও, কুয়ালালামপুর, ইয়াঙ্গুন, মস্কো, সিঙ্গাপুরম, দুবাই, লন্ডন, ওয়াশিংটন।

"