নিজস্ব প্রতিবেদক
সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ কমবে সব খাতে
এবার বাজেট সংশোধন করা হবে জাতীয় সংসদের অভিমত নিয়ে। সংসদের আগামী অধিবেশনে বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এর আগে কখনও জাতীয় বাজেট সংশোধনের বিষয়টি সংসদে আলোচনা করে চূড়ান্ত করেননি দেশের কোনও অর্থমন্ত্রী। এ কার্যক্রমের ফলে এবার অনেকটা দ্রুতই বাজেট সংশোধন করার কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সংশোধিত বাজেটে সব খাতেই বরাদ্দ কমিয়ে আনবেন তিনি।
এর কারণ, ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন ভ্যাট আইন ২০১৯ সাল পর্যন্ত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর ফলে ঘোষিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভবনা কমেছে। এই কারণেই সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ কমে যাবারও সম্ভবনা বেড়েছে। এছাড়া এবারের বাজেটে ঘাটতি রয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৫ শতাংশ। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভবনা কম। ফলে কোনোভাবেই এই ঘাটতি বাড়াতে চান না আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ভ্যাট আইন কার্যকর না হওয়ায় জাতীয় বাজেট ঘোষণায় খাত ভিত্তিক বরাদ্দের পরিমাণ পরিবর্তন করা হবে। কেননা বাজেটে যে খাতে যত বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছিল, সেসব খাতে সেই পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে না। রাজস্ব আয় না হলে খাতভিত্তিক বরাদ্দ আসবে কোত্থেকে? নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হলে সেখান থেকে বাড়তি যে আয় হতো, তার ওপর নির্ভর করেই খাত ভিত্তিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হয়নি, সেহেতু রাজস্ব আসবে না। তবে বাজেটের অন্যান্য লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও দিকনির্দেশনা ঠিক থাকবে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখা।
জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উত্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটের এ পরিমাণ মোট জিডিপির ১৮ শতাংশ। এটাকে ঠিক রেখে কিভাবে খাতভিত্তিক বরাদ্দ কমানো যায় তা নিয়ে কাজ করছে বাজেট শাখা।
প্রস্তাবিত ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের’ শিরোনামে বাজেটটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের পূর্ণাঙ্গ বাজেট। নানান উপায়ে নতুন কর ও ভ্যাট আরোপ করেই সাজানো হয়েছিল চলতি জাতীয় বাজেট। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে বাজেটে এবার সামাজিক বলয়ের পরিধিও বাড়ানো হয়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছিল সব খাতের বরাদ্দ।
বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে ৫১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ২ দশমিক ৩ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে ৬০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। এই অংক হলো মোট জিডিপির ২ দশমিক ৭ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা থেকে নেওয়া হবে ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ১ দশমিক ৩ শতাংশ।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এ বছর শেষে মূল্যস্ফীতি হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসার আশা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্য ঠিক রাখার চেষ্টা চলছে। সুদের হার ক্রমহ্রাসমান ধারায় ও নমিনাল বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকবে বলেও আশা করা হয়েছে এবারের বাজেটে।
"