নিজস্ব প্রতিবেদক
ঋণ উত্তোলনে ব্যর্থতা
ব্যাংকের মূলধন ঘাটতিকালে সুদ মওকুফ
একদিকে প্রভিশন ঘাটতি আবার অন্যদিকে সুদ মওকুফ; দুটোই পরস্পরবিরোধী। তবে সেটাই ঘটে চলছে রাষ্ট্রায়ত্ত সাত ব্যাংকে। ৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গ্রাহকদের নেওয়া ঋণের ওপর গত পাঁচ বছরে ১ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করেছে। খেলাপীদের কাছ থেকে ঋণ উত্তোলনে ব্যর্থতাই এর কারণ বলে মনে করে দেশের অর্থনীতিবিদরা। এ ছাড়া প্রতি বছরের বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর আমানত ঘাটতি জোগানের জন্য বিপুল পরিমান আলাদা বাজেট রাখাকেও দায়ী করেন তারা।
তবে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুদ মওকুফ একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। বিভিন্ন খাতে ব্যাংক অর্থায়ন করে থাকে। অনেক সময় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা লাভজনক না-ও হতে পারে। আবার অনেক গ্রাহক ব্যবসায় লোকসান গুনতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলেও ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ হয়ে পড়তে পারে। সেসব ক্ষেত্রে ব্যাংকের টাকা পুনরুদ্ধারে অনেক সময় সুদ মওকুফের বিষয়টি চলে আসে। তবে এক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা রয়েছে। চাইলেই যেকোনো সুদ মওকুফের সুযোগ নেই। সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ব্যাংকের যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টিও আমলে রাখতে হয়। তিনি বলেন, সরকারি ব্যাংক শুধু মুনাফার কথা বিবেচনা করে না। সাধারণ মানুষের প্রতিও কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। এসব বিবেচনা থেকেই ঋণ মওকুফের সুযোগ দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে ১ হাজার ৮৪৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকার সুদ মওকুফ করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত সাত ব্যাংক।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সোনালী ব্যাংক গত পাঁচ বছরে ৫৯৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার সুদ মওকুফ করেছে। অগ্রণী ব্যাংক করেছে ৬৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এছাড়া রূপালী ৩৭৪ কোটি ১৮ লাখ, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৭৪ কোটি ৫৪ লাখ, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১৭ কোটি ৯১ লাখ, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ১১৭ কোটি ৬৩ লাখ ও বেসিক ব্যাংক ৩১ কোটি ৩১ লাখ টাকার সুদ মওকুফ করেছে।
"