নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ জুন, ২০১৭

এখনো উদ্ধার হয়নি ৬৬.৩৭ মিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি যাওয়া ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ৩৪ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্ধার হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত চুরি যাওয়া রিজার্ভের ৬৬ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে মো. আবদুল্লাহর (লক্ষ্মীপুর-৪) লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া রিজার্ভের ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে শ্রীলংকায় পাঠানো ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক (এফআরবি, এনওয়াই) য্ক্তুরাষ্ট্রে ফেরত দেয়। ফিলিপাইনে পাঠানো বাকি ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪.৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হয়েছে।

সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেন, ফিলিপাইনে পাঠানো টাকার অবশিষ্ট অংশ উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, অর্থমন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগসহ সকল সংস্থা একযোগে কাজ করছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আইনি প্রক্রিয়ায় চুরি যাওয়া সমুদয় অর্থ উদ্ধারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় দলিল সরবরাহ সাপেক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় হতে ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের বরাবরে পালের্মো কনভেনশনের আওতায় মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্স রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস বাংলাদেশকে সার্বিক সহযোগিতা করছে।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এ চুরির ঘটনায় ইতোমধ্যে ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হযেছে এবং চুরির অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারে ফিলিপাইনের আইনি উদ্যোগ চলমান রয়েছে। এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য তারিখ ১৫ বার পিছিয়েছে আদালত। আগামী ৩০ জুলাই নতুন দিন ধার্য করা হয়েছে। মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম এ কে এম মাঈন উদ্দিন সিদ্দিকী নতুন এ দিন ধার্য করেন।

২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়ে যায়। পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। দেশের অভ্যন্তরের কোনো একটি চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থ পাচার করেছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওই ঘটনায় গত বছরের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতানামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছেন।

জানা গেছে, ঘটনার পর থেকেই সিআইডির একটি বিশেষজ্ঞ দল তদন্তে নামে। ব্যাংকের ভেতর অনেক ইলেকট্রনিক প্রমাণ খতিয়ে দেখে। দলটির ধারণা, এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিলিং রুমের সার্ভার ও কম্পিউটার থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল সব তথ্য। দুটি বিভাগের প্রধানসহ আরো কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসব কাজ করে। এদের মধ্যে আইটি বিভাগের লোকজনের সংখ্যাই বেশি। হ্যাকাররা সরাসরি তাদের সহযোগিতা নিয়ে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে। সুবিধাজনক সময় টাকাগুলো তুলে নেয়। সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির আশ্রয় নেয় হ্যাকাররা।

২৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের পত্রিকা ইনকোয়েরারের প্রতিবেদনে রির্জাভ চুরির ঘটনার প্রথম তথ্য প্রকাশ পায়। ওই সময় বলা হয়, ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল হ্যাকাররা। এ প্রচেষ্টায় দুই ধাপে প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার লোপাট করলেও ৮৭০ মিলিয়ন ডলার পাচারে ব্যর্থ হয় তারা। এরপরই মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist