নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ আগস্ট, ২০২০

ভ্যাট পরিশোধ ঘরে বসেই

ই-পেমেন্ট বা অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট, টার্নওভার কর, সম্পূরক শুল্ক, জরিমানা, সুদ পরিশোধের ব্যবস্থা চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ফলে ঘরে বসেই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে ভ্যাটের টাকা ব্যাংক হিসাব থেকে সরাসরি সরকারের কোষাগারে জমা দিতে পারবেন। এ প্রক্রিয়ায় শুরুতে এইচএসবিসি, প্রাইম ও মিডল্যান্ড ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহকরা পেমেন্ট করতে পারবেন। আর ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব ব্যাংককে এ প্রক্রিয়ার মধ্যে আনা হবে।

সম্প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এই ইপেমেন্ট ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন। এনবিআর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে উপস্থিত ছিলেন মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, অর্থ সচিব আবদূর রউফ তালুকদার, আর্থিক বিভাগ প্রতিষ্ঠানের সচিব আসাদুল ইসলাম প্রমুখ।

রাজস্ব আদায় বাড়াতে অটোমেশনের বিকল্প নেই জানিয়ে অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ই-পেমেন্ট মডিউল চালু হয়েছে। ভ্যাটসংক্রাস্ত সব কর ই-পেমেন্টের মাধ্যমে দেওয়া যাবে। আপাতত তিনটি ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট দেওয়া যাবে। তবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের সব ব্যাংক থেকে ই-পেমেন্ট করা যাবে বলে জানান তিনি।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আইবাসের ১৫টি মডিউলের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন, রিটার্ন ও ট্যাক্স পেয়ার অ্যাকাউন্ট মডিউল তিনটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বন্ড অটোমেশন ও সিঙ্গেল ইউনডো সিস্টেমের অটোমেশনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। রেজিস্ট্রেশন মডিউল অনলাইন ভিত্তিক করায় এরই মধ্যে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭২০ জন করদাতা অনলাইনে বিআইএন গ্রহণ করেছেন। ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ৪২ হাজারের বেশি করদাতা অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করেছেন। আমরা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করব। আমি আশা করছি, করদাতার এই পদ্ধতি গ্রহণ করবেন।

এনবিআর জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা বাস্তবায়ন এবং পরিপালন খরচ কমিয়ে ‘ইজি অব ডুইং বিজনেস’ সূচকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয়ে চালু হচ্ছে ই-পেমেন্ট মডিউল। এরই মধ্যে ই-পেমেন্ট মডিউলটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভ্যাট সংক্রান্ত সব কর (ভ্যাট, টার্ন ওভার কর, সম্পূরক শুল্ক, জরিমানা, সুদ ইত্যাদি) ই-পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে পরিশোধ করা যাবে। ই-পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি প্রদেয় রাজস্ব ঘরে বসে তার ব্যাংক হিসাব থেকে সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা করতে পারবেন। করদাতা কর পরিশোধের জন্য তার ব্যাংককে ইনস্ট্রাকশন (নির্দেশনা) পাঠাবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের আরটিজিএস (রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট) স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমের মাধ্যমে নির্ধারিত হিসাব কোডে জমা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাৎক্ষণিক অটোমেটেড একটি চালান নম্বর জেনারেট করে ওই অর্থ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে জমা করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই জমার তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনলাইনে আইভিএএস এ প্রেরণ করবে যা আইভিএএস রক্ষিত করদাতার হিসেবে সংরক্ষিত হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই জমার তথ্য আইবিএএস (ইন্টিগ্রেটেড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম) সিস্টেমেও পাঠাবে। আইভিএএস থেকে ই-মেইলে করদাতাকে ই-পেমেন্ট কনফার্মেশন মেসেজ পাঠাবে যা করদাতা মাসিক দাখিলপত্রে (রিটার্নে) ট্রেজারি জমার প্রমাণিক দলিল হিসেবে প্রদর্শন করবে।

ই-পেমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে যেসব সুবিধা পাওয়া যাবে , সেগুলো হলো ই-পেমেন্ট মডিউল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ যা পরিপালন খরচ কমাবে এবং ইজি অব ডুইং বিজনেস সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close