বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি

  ০৭ জুলাই, ২০২০

বেনাপোল কাস্টম হাউস রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে

রাজস্ব আদায়ে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল কাস্টম হাউসে ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে পড়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্ধেকের মতো রাজস্ব আয় হয়েছে দেশের বন্দরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়কারী এই কাস্টম হাউসে।

কাস্টম হাউসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৭০ কোটি ১২ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। তবে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন, কাস্টমের নানা হয়রানির কারণে ব্যবসায়ীরা এ পথে আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় অর্থবছরের শুরুতেই রাজস্ব আয়ে পিছিয়ে ছিল এই কাস্টম হাউস। পরে করোনার কারণে ভারতের সঙ্গে টানা আড়াই মাস আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আহরণ নেমে যায় অর্ধেকে।

কাস্টম সূত্র জানায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ৬ হাজার ২৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বেনাপোল কাস্টম হাউসকে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয় ৫ হাজার ৬০৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এ সময় লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কাস্টম কর্তৃপক্ষ আদায় করে মাত্র ২ হাজার ৫৩৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এখানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৩ হাজার ৭০ কোটি ১২ লাখ টাকা। এ সময় ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৮ টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য।

এর আগেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি ছিল। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৫ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এ সময় আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সেবারও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, আড়াই মাস এপথে আমদানি বন্ধ ছিল। এ ছাড়া আমদানি পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে রাজস্ব ঘাটতি আরো বেশি হয়েছে। এ পথে রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন বাড়ানো ও হয়রানিমুক্ত হতে হবে। এ ছাড়া বন্দরে বার বার রহস্যজনক অগ্নিকান্ডে অনেক ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন। বন্দর কোনো ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় তারা এ বন্দর ছেড়েছেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, পণ্য ছাড়করণের ক্ষেত্রে বৈধ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না হওয়ায় আমদানি কমে যাওয়া একটি কারণ। এতে রাজস্ব দিন দিন ঘাটতি হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এ ছাড়া শুরু থেকেই রাজস্ব ঘাটতি হয়ে আসছে তাতে চলতি অর্থবছর শেষে বিপুল পরিমাণে ঘাটতি দাঁড়াবে। বারবার রাজস্ব ঘাটতির কারণ হিসেবে তারা মনে করছেন, চাহিদা অনুপাতে বেনাপোল বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়া এবং উচ্চ শুল্কহারের পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পণ্য দ্রুত খালাসসহ ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ালে রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ হওয়া সম্ভব।

বেনাপোল কাস্টম হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, করোনার কারণে প্রথমত আড়াই মাস ধরে আমদানি বন্ধ ছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close