সরকারের নিজস্ব অর্থের ৫০ শতাংশ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে রাখার সুদহার নির্দিষ্ট করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ব্যাংকের সুদহার বেঁধে দেওয়ার পর আমানতকারীরা যাতে সরকারি ব্যাংকের দিকে জুঁকে না পড়েন, তা ঠেকাতে বেসরকারি ব্যাংকে ডিপোজিটে মুনাফা আধা শতাংশ বেশি রাখা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অর্থ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখলে সর্বোচ্চ সুদ পাবে ৬ শতাংশ। আর এই অর্থ যদি সরকারি ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখে, তাহলে সর্বোচ্চ সুদ পাবে সাড়ে ৫ শতাংশ। অর্থাৎ বেসরকারি ব্যাংকে সুদ বেশি পাবে আধা শতাংশ।

গত সোমবার অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব মৃত্যুঞ্জয় সাহার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এডিপি এবং পরিচালন বাজেটের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকার মালিকানাধীন কোম্পানির নিজস্ব তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থেও ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসায় নিয়োজিত বেসরকারি ব্যাংক অথবা অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানে আমানত রাখার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা প্রয়োজন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, উল্লিখিত উৎসসমূহের উদ্বৃত্ত অর্থ সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদহারে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকে এবং মোট উদ্বৃত্ত অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ সুদহারে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে মেয়াদি আমানত রাখা যাবে। ‘তবে প্রতিষ্ঠানসমূহের ভবিষ্যৎ তহবিলের অর্থ, পেনশন তহবিলের অর্থ এবং এনডাওমেন্ট ফান্ডের অর্থ এর আওতাবহির্ভূত থাকবে। এর আগে ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল সরকারের নিজস্ব অর্থের ৫০ শতাংশ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে রাখার বিধান রেখে প্রজ্ঞাপন জরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে ওই প্রজ্ঞাপনে আমানত রাখার ওপর সুদের হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। এমনকি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে সুদের পার্থক্যও রাখা হয়নি। নতুন প্রজ্ঞাপনে এগুলো স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

২০১৮ সালের ২ এপ্রিলের আগে সরকারি অর্থের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অর্থের ২০ শতাংশ এবং মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব অর্থের ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বিধান ছিল। আগামী ১ এপ্রিল থেকে সব ধরনের ব্যাংকঋণে সুদহার সর্বোচ্চ নয় শতাংশ এবং আমানতে সুদহার সর্বোচ্চ ছয় শতাংশ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও সুদের এ হার নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

"