নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৯ অক্টোবর, ২০১৯

ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুত হবে চামড়াশিল্প নগরীর সিইটিপি

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার সিইটিপি প্রস্তুত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গতকাল মঙ্গলবার সাভারের চামড়াশিল্প নগরীতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার সিইটিপি পরিদর্শন ও আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।

সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা এর আগে যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সেভাবেই বর্জ্য শোধনাগার সিইটিপির কাজ চলছে। আমরা এখন চেষ্টা করছি ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে (এলডব্লিউজি) লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ যারা আন্তর্জাতিকভাবে সার্টিফিকেশন করে তাদের আমন্ত্রণ জানাব। তারা এসে সিইটিপিসহ পুরো ট্যানারি শিল্প অডিট করে সার্টিফিকেশন করে দেবে।

তিনি বলেন, আমরা যদি তাদের সার্টিফিকেশন একবার পেয়ে যাই। তাহলে আমাদের এখন যে রফতানির ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, সে সমস্যাগুলো আর থাকবে না। তখন আমরা এই খাতটিকে রফতানির একটি বড় খাতে নিয়ে যেতে পারব। সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা আবারও ছয় সপ্তাহ পরে আসব এবং দেখব কাজের অগ্রগতি কতটুকু। আমাদের প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবেই এগোচ্ছে। আমরা আশা করছি ডিসেম্বরের মধ্যেই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সার্টিফিকেশনটা পাব।

অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, চামড়া শিল্প একটি বড় খাত। আমরা রফতানি বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রে চামড়া শিল্পকে পোশাক শিল্পের পরেই চিন্তা করেছি। গুরুত্ব দিয়েই আমরা এই কাজটি করছি। তিনি বলেন, আমরা সরকার গঠনের পরেই বিসিকসহ সবাই এ সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছি। আমরা আজ এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছি, বিশ্ববাজারে যাওয়ার জন্য আমাদের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন।

সভায় চামড়া শিল্পনগরীর উন্নয়ন কাজের সর্বশেষ অবস্থা বিস্তারিত মূল্যায়ন করা হয়। এ সময় জানানো হয়, এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) কাজ শতকরা ৯৮ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সিইটিপি’র চারটি মডিউল চালু রয়েছে এবং এগুলো বর্জ্য পরিশোধনের কাজ করছে। এ সভায় উল্লেখ করা হয়, সিইটিপি’র কার্যক্রম শতভাগ সম্পন্ন করার জন্য যন্ত্রপাতিসহ আমদানিযোগ্য মালামাল এরই মধ্যে প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে। বর্তমানে এগুলো স্থাপনের কাজ চলছে। সিইটিপি’র ডি-ওয়াটারিং হাউসের ৯টি ইউনিটের মধ্যে তিনটি ইউনিটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং এগুলোতে সøাজ কেক তৈরি হচ্ছে। বাকি ছয়টি ইউনিটের কাজ ২৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে।

সভায় আরো জানানো হয়, সিইটিপি’র ক্রোম সেপারেশনের লক্ষ্যে অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে। বর্তমানে সিইটিপিতে স্থাপিত সাতটি জেনারেটরের সবক’টি সচল রয়েছে এবং সব পাম্প চালু আছে। এর সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরি ও অটোমেশনের কাজ নভেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। একই সঙ্গে এ শিল্পনগরীতে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য দুটি ডাম্পিং ইয়ার্ড স্থাপনের লক্ষ্যে ড্রয়িং ও ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি নির্মাণের জন্য আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ ছাড়া, সিইটিপি’র অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

সভায় এলডব্লিউজি সনদ অর্জনের লক্ষ্যে এখন থেকে মক অডিট পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ অডিটের ফলাফলের ভিত্তিতে বিভিন্ন সূচকে ধারাবাহিক গুণগত পরিবর্তনের জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বাই-প্রোডাক্ট উৎপাদনকারীদের অনুকূলে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এক্ষেত্রে যেসব প্লটে এখনো ট্যানারি কারখানা স্থাপন করা হয়নি, সেগুলোর বরাদ্দ বাতিল করে বাই-প্রোডাক্ট উৎপাদনকারীদের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় সচিব মো. আবদুল হালিম, বিসিকের চেয়ারম্যান মোস্তাক হাসান, চামড়া শিল্পের প্রকল্প পরিচালকসহ চামড়া শিল্পের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close