নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

তারল্য বাড়ানোর খবরে শেয়ারবাজারে তেজিভাব

পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট কাটাতে রেপোর (পুনঃক্রয় চুক্তি) মাধ্যমে অর্থ সরবরাহের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর শেয়ারবাজারে লেনদেন ও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে।

পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব পোর্টফোলিওতে সরাসরি বিনিয়োগ অথবা সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তারল্য বাড়াতে রোববার বিকালে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর তারল্য সরবরাহের মাধ্যমে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং গতিশীল পুঁজিবাজার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। অবশ্য রোববার সকালে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর পরপরই বাংলাদেশ ব্যাংক এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়ি পড়ে। যার প্রভাবে শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়। কিন্তু লেনদেন চলাকালীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না আসায় লেনদেনের গতি ছিল স্লো। তবে সকালে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জন বিকেলেই সত্য বলে প্রমাণিত হয়। যার প্রভাবে সোমবার লেনদেনের শুরু থেকেই শেয়ারবাজারে তেজিভাব লক্ষ্য করা যায়। লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়তে থাকে। ফলে দেখা মেলে বড় উত্থানের।

এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৫৩টির। আর ১৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার পয়েন্টে ওঠে এসেছে। এর মাধ্যমে দুই দিনের উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৪০ পয়েন্টের ওপরে বাড়ল। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বাকি দুটি সূচকও। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়া সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৮৯ পয়েন্টে রয়েছে।

ডিএসইর এক সদস্য বলেন, সরকার যে শেয়ারবাজার ভালো করতে চায় তা সাম্প্রতিক সময়ের কিছু পদক্ষেপে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অর্থমন্ত্রী অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের এডিআর বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এরপর অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন গ্রামীণফোনের কাছ থেকে বকেয়া পাওনা আলোচনার মাধ্যমে আদায় করা হবে। এখন রেপোর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে তারল্য বাড়ানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এ তিনটি পদক্ষেপই শেয়ারবাজারের জন্য বড় ধরনের সুখবর। এতে বাজারে বড় উত্থান হওয়াটাই স্বাভাবিক ঘটনা- বলেন ডিএসইর এই সদস্য।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি শেয়ারবাজারে যে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায় তার মূল কারণ তারল্য ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট। সম্প্রতি যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাতে আশা করা যায় বাজারে তারল্য বাড়বে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়বে। এদিকে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫১৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩০৪ কোটি ৭২ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২১২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে সাত কার্যদিবস পর আবারও ৫০০ কোটি টাকার ওপর লেনদেন হলো ডিএসইতে। বাজারটিতে টাকার পরিমাণে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২০ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ন্যাশনাল টিউবসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৫২ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সামিট পাওয়ার।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- ভিএফএস থ্রেড ডাইং, ফরচুন সুজ, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, রেনেটা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৭২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ২১৮ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৫৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯৯টির, কমেছে ৩৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close