নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ আগস্ট, ২০১৯

আর্জেন্টিনায় পোশাক রফতানি

শুল্কমুক্ত সুবিধা চায় বাংলাদেশ

বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। উচ্চ আমদানি শুল্কহারের কারণে বাংলাদেশ আর্জেন্টিনায় প্রত্যাশা অনুযায়ী তৈরি পোশাক রফতানি করতে পারছে না। বাংলাদেশ গত অর্থবছরে আর্জেন্টিনা থেকে ৬২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে, একই সময় মাত্র ১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আর্জেন্টিনায় রফতানি করেছে। ফলে দুদেশের বাণিজ্য ব্যবধান বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর্জেন্টিনায় সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গত বৃহস্পতিবার আর্জেন্টিনার উৎপাদন ও শ্রমমন্ত্রী ডান্টে সিকার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এসব কথা জানিয়েছেন। গত শুক্রবার পাঠানো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা আবদুল লতিফ বকসী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বৈঠককালে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আর্জেন্টিনা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের আমদানি শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে আনলে বা এফটিএ স্বাক্ষর করে শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা দিলে রফতানি বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশে এখন চমৎকার বিনিয়োগের পরিবেশ বিরাজ করছে জানিয়ে মন্ত্রী আর্জেন্টিনার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ উন্নত ও বিশ্বমানের তৈরি পোশাক স্বল্পমূল্যে বিশ্ববাজারে রফতানি করছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আর্জেন্টিনায় রফতানি করতে তৈরি পোশাক আমদানির ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্ক হ্রাস করা একান্ত প্রয়োজন। আর্জেন্টিনার উৎপাদন ও শ্রমমন্ত্রী ডান্টে সিকার বলেন, আগামী মাসে তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক হ্রাস বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সভা করা হবে। এ সময় উভয় দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পারস্পরিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার খাত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে একমত হন।

এরপর বাণিজ্যমন্ত্রী আর্জেন্টিনার কৃষি, প্রাণী ও মৎস্য পালনবিষয়ক মন্ত্রী লুইস এৎসেভেহারের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাংলাদেশ আর্জেন্টিনা থেকে বিপুল পরিমাণ কৃষিপণ্য, যেমনÑভোজ্য তেল, শস্য, তৈলবীজ প্রভৃতি আমদানি করে। আর্জেন্টিনা কৃষি, পশুপালন, মৎস্য পালন, ক্রীড়া প্রভৃতি খাতে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোরাসিও রেইসারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে মার্কোসারের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির জন্য প্রস্তাব দেয়। এফটিএ স্বাক্ষর উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হবে। আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রস্তাবিত মুক্তবাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি মার্কোসারের আগামী শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনার বিষয়ে আশ্বাস দেন। এ ছাড়া শিগগিরই ঢাকায় কৃষি, মৎস্য ও পশুসম্পদ বিষয়ে আর্জেন্টিনা একটি আঞ্চলিক সেমিনার আয়োজন করার বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী আর্জেন্টিনার চেম্বার ফর ট্রেড অ্যান্ড সার্ভিসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাংলাদেশের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করার জন্য বাংলাদেশ থেকে অধিক পরিমাণে তৈরি পোশাক, ওষুধ, পাট, জুতা, প্লাস্টিক সামগ্রী আমদানির জন্য ওই চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করছে, এখানে বিনিয়োগ করার জন্য তিনি চেম্বারের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। চেম্বারের নেতারা উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার জন্য মতপ্রকাশ করেন। বাণিজ্যমন্ত্রী উভয় দেশের শীর্ষস্থানীয় চেম্বারের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব করেন। এতে আর্জেন্টিনা চেম্বারের নেতারা সম্মত হন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close