নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ আগস্ট, ২০১৯

৫ বছরে ৬ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা এসেছে

রেমিট্যান্স আহরণে নবম অবস্থানে বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাপী রেমিট্যান্স আহরণকারী দেশগুলোর মধ্যে এবারও বাংলাদেশের অবস্থান নবম। ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ ১৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আহরণ করে এ স্থান ধরে রেখেছে। এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত, দ্বিতীয় চীন ও তৃতীয় অবস্থানে আছে মেক্সিকো। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের মাইগ্রেশন অ্যান্ড রেমিট্যান্স ইউনিট বিভাগ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের রেমিট্যান্সের গতি প্রাণবন্ত ছিল। ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে বিশ্বে প্রবাসী আয়ের দেশ হিসেবে অবস্থান বদলায়নি। কারণ এর আগের বছর ২০১৭ সালেও বাংলাদেশ একই অবস্থানে ছিল। আর ২০১৮ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় রেমিট্যান্সে ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়ে ১৩১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা ২০১৭ সালে প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ শতাংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী উত্থান ঘটেছে। এছাড়া তেলের দাম বাড়ায় রেমিট্যান্স আহরণে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ২০১৮ সালে ভারতে রেমিট্যান্স ১৪ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। আলোচিত বছরে দেশটি ৭ হাজার ৮৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আহরণ করে প্রথম স্থান ধরে রেখেছে। ভারতের পরে রয়েছে চীন, মেক্সিকো, ফিলিপাইন, মিসর, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ইউক্রেন ও ভিয়েতনাম।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালে চীনের রেমিট্যান্সের পরিমাণ ৬ হাজার ৭৪০ কোটি ডলার, মেক্সিকোর ৩ হাজার ৫৭০ কোটি, ফিলিপাইনের ৩ হাজার ৩৮০ কোটি, মিসর ২ হাজার ৮৯০ কোটি, নাইজেরিয়ার ২ হাজার ৪৩০ কোটি, পাকিস্তান ২ হাজার ১০০ কোটি, ভিয়েতনাম ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার, বাংলাদেশ ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার এবং ইউক্রেন ১ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আহরণ করেছে।

পাঁচ বছরে রেকর্ড রেমিট্যান্স : দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। গত পাঁচ বছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৭ হাজার ৪৪১ কোটি ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা (১ ডলার ৮৮ টাকা ধরে)। এটি চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা বেশি। সর্বশেষ পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে মাঝে দুই বছর রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমলেও গত দুই বছরে তা আবার বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বিশেষ করে হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে নেওয়া নানা উদ্যোগের সুফল পাওয়া যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।’ সে জন্য বাজেটে ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে আগামীতে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরো বাড়বে বলেও তিনি জানান।

সর্বশেষ পাঁচ বছরে রেমিট্যান্স : গত পাঁচ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আছে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার।

গত পাঁচ অর্থবছরের মধ্যে ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রেমিট্যান্স নিম্নমুখী হলেও ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে বিদায়ী অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ১ হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসীরা ১৫৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। অন্যদিকে পঞ্জিকা বছর হিসাবে, ২০১৮ সালে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার, ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close