মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

  ১৬ জুন, ২০১৯

এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে চায়ের উৎপাদন

চায়ের শহর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল। সর্বাধিক বৃষ্টিপাতমুখর এলাকার হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে এ শহরের। এ এলাকার বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিকতা হিসাব-নিকাশ করে চা গবেষকরা সম্ভাব্য পরিসংখ্যানগুলো তুলে ধরতে পারেন। তারা ধারণা করতে পারেন বছর শেষে দেশব্যাপী চায়ের মোট উৎপাদন কতখানি গিয়ে দাঁড়াবে। এ বছর চায়ের জন্য মঙ্গলবার্তার বয়ে নিয়ে আসতে চলেছে। শ্রীমঙ্গলে এবার চায়ের জন্য বিরাজ করছে অনুকূল পরিবেশ। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত এবং চমৎকার আবহাওয়া ফলে সুদিন ফিরেছে চায়ের পাতায় পাতায়। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, চলতি বছরের প্রথম বৃষ্টিপাত শুরু হয় ১৮ ফেব্রুয়ারি। ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ জুন শ্রীমঙ্গলে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮৭৭ মিলিমিটার। প্রায় প্রতিদিনই এখানে অল্প অল্প করে বৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট (পিডিইউ) সূত্র জানায়, বর্তমানে নিবন্ধন করা চা বাগানের সংখ্যা ১৬৪টি চা বাগানের মধ্যে বৃহত্তর সিলেটেই রয়েছে ১৩৫টি। মৌলভীবাজার জেলার ৯১টি চা বাগানের মধ্যে প্রায় ৪০টি শ্রীমঙ্গল উপজেলায় অবস্থিত। এজন্য শ্রীমঙ্গলকে ‘চায়ের রাজধানী’ বলা হয়।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিটিআরআই) পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, চায়ের জন্য অত্যন্ত সুন্দর প্রাকৃতিক অবস্থা বিরাজ করছে। অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশ, প্রয়োজনীয় বৃষ্টির এই ধারাবাহিকতা চলমান থাকলে এবার চায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ চা উৎপন্ন হবে। বিটিআরআই সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে চা উৎপাদন মৌসুমে দেশে চা উৎপাদন হয়েছে ৮২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন কেজি। তবে বাংলাদেশ চা বোর্ড ২০১৮ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৭২ দশমিক ৩ মিলিয়ন কেজি। এর দুই বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালে সব ধরনের রেকর্ড ভেঙে দেশের চা শিল্পের ১৬২ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হয়েছিল ৮৫ দশমিক ০৫ মিলিয়ন কেজি। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের (পিডিইউ) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক বলেন, আমরা আশা করছি, অতীতের চা উৎপাদনের সব ধরনের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে এবার। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৪ দশমিক ১৪ মিলিয়ন কেজি।

আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এবার চা উৎপাদন ৯০ মিলিয়ন কেজি অতিক্রম করবে। এর কারণ জানতে চাইলে ড. এ কে এম রফিকুল হক বলেন, অনুকূল আবহাওয়া ছাড়াও বাধ্যতামূলক চা আবাদযোগ্য জমির আড়াই পার্সেন্ট হারে প্রায় প্রতিটি বাগানে চা সম্প্রসারণ, চা জমির সম্প্রসারণে বাগানগুলোর প্রতি ব্যাপক মনিটরিং, আনুষঙ্গিক সরঞ্জামাদির পর্যাপ্ততা, সময়মতো সার ও কীটনাশক প্রাপ্তি, ক্লোন চা গাছের ব্যবহার বৃদ্ধি, রফতানি যাওয়া এবং সর্বোপরি চা বোর্ডের নজরদারির কারণে এবার দেশে এই চা উৎপাদন হয়েছে।

একটি ছোট পরিসংখ্যান টেনে ড. এ কে এম রফিকুল হক বলেন, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন কেজি। বর্তমানে এই এপ্রিল মাসেই ৮ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন কেজি হয়েছে। অর্থাৎ গতবারের থেকে শতকরা ৫৯ শতাংশ বেশি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close