নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ এপ্রিল, ২০১৯

এক গ্রাহককে একাধিক ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একক গ্রাহককে একাধিক ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে একক গ্রাহককে একাধিক ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার প্রবণতা প্রায় চার শতাংশ বেড়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকিং কার্যক্রম নগরকেন্দ্রিক, যা ব্যাংকিং খাতে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসে ‘ক্রেডিট অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালায় উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের মহাপরিচালক আবদুর রহিম। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা।

বিআইবিএমের কর্মশালাটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিস থেকে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের আঞ্চলিক শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসের অডিটোরিয়ামে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসের নির্বাহী পরিচালক আবু ফরাহ মো. নাছের। কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশাসন ও হিসাব এবং গবেষণা, উন্নয়ন এবং পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী। গবেষণা দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা, বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র প-িত, বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মোশাররেফ হোসেন এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসেন।

দেশের ৩২টি ব্যাংকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন তৈরিতে ব্যাংকের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনা, সার্কুলার ইত্যাদি সেকেন্ডারি তথ্যের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, গ্রামের মানুষ ঋণ কম পাচ্ছে। এতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং কম হচ্ছে। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে নীতিনির্ধারকদের চিন্তা করতে হবে। কীভাবে সবাইকে ব্যাংকিংসেবার আওতায় আনা যায়।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। ঋণ অনুমোদন পর্যায়ে সব জেনেশুনেই গ্রাহককে ঋণ দিলে খেলাপি হওয়ার আশঙ্কা কমবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালকদের অধিকাংশই বেনামি ঋণ নেয়। এটি বন্ধ করা প্রয়োজন, যা করা সম্ভব হলে খেলাপি কমে যাবে।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত অর্থায়ন খেলাপি ঋণের মূল কারণ। বেনামি ঋণ আগামী দিনের বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। টাকা নিলে ফেরত না দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে আদালত করতে হবে। সেখানে বেঞ্চের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close