বাণিজ্য ডেস্ক

  ১৮ মার্চ, ২০১৯

বাণিজ্যযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি ৭৮০ কোটি ডলার

চীনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুরু করা বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে জিডিপি থেকে ২০১৮ সালে প্রায় ৭৮০ কোটি টাকা হারিয়েছে মার্কিন অর্থনীতি। দেশটির শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল অর্থনীতিবিদের গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে। চলতি সপ্তাহেই এ গবেষণা নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে। খবর রয়টার্স।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের স্বল্পমেয়াদি ক্ষতির হিসাব করতে গিয়ে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট কিছু দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির পরিমাণ ৩১ দশমিক পাঁচ শতাংশ কমেছে। এছাড়া কিছু নির্দিষ্ট দেশে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানির পরিমাণ কমেছে ১১ শতাংশ।

এছাড়া তাদের গবেষণায় ভোক্তা ও উৎপাদকদের বড় অঙ্কের ক্ষতির হওয়ার তথ্য ওঠে এসেছে। এতে দেখানো হয়েছে, দেশটির ভোক্তা ও উৎপাদকরা উচ্চ আমদানি খরচের কারণে ওই বছরে ৬ হাজার ৮৮০ কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, দেশীয় উৎপাদকদের উচ্চমূল্যের কারণে বাড়তি শুল্কের মুনাফা ও লাভ হিসেবের পর দেখা গেছে, সামগ্রিকভাবে ক্ষতি হয়েছে ৭৮০ কোটি ডলার বা জিডিপির শূন্য দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

এ গবেষণা পরিচালনাকারীদের মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলি, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, ইয়েলে ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসের (ইউসিএলএ) অর্থনীতিবিদরা রয়েছেন। ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ এটি প্রকাশ করেছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব খুঁজতে গিয়ে তারা দেখেছেন, রিপাবলিকান অধ্যুষিত এলাকাগুলোর রফতানিযোগ্য খাতের কর্মীরা সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হয়েছেন। শুল্ক নিয়ে যুদ্ধ শুরুর কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনেকে ভ্যাট ম্যান বলেও উল্লেখ করেছেন। বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছেন।

অবশ্য বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা। বৈদেশিক বিনিয়োগ আরও সহজ করতে নতুন একটি আইন পাস করেছে চীন সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নতুন এ আইন পাস করেছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। উভয় দেশই পরস্পরের পণ্য আমদানিতে হাজার হাজার কোটি ডলারের শুল্কারোপ করেছে। এর প্রভাব পড়েছে বিশ্বের আরো অনেক দেশের ওপর।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন এবং দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথিজারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ হে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। অবশ্য উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধের নিষ্পত্তি প্রত্যাশার চেয়ে ধীরগতিতে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার একটি সম্মেলনে মুচিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি মার্চের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আগে এ সময়ের মধ্যে এ চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতার জন্য আরো অনেক কাজ করার রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close