নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

পরমাণু প্রকল্পের অগ্রগতি আইএইএ’র বৈঠকে উপস্থাপন

ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে পারমাণবিক শক্তি নিয়ে নিজেদের অগ্রগতি সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। পারমাণবিক শক্তি স্থাপনা উন্নয়নের সাময়িক সমস্যা নিয়ে এক প্রায়োগিক বৈঠকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ৪০টি সদস্য দেশের শতাধিক প্রতিনিধির সামনে নিজেদের অগ্রগতি তুলে ধরে বাংলাদেশ। আইএইএ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। আগামী দশকের মধ্যভাগের আগে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে ৯ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে দেশটি। ওই সময়ের মধ্যে দেশের দুটি পারমাণবিক প্রকল্পই সক্রিয় হওয়ার কথা রয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রজেক্ট পরিচালক ও নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শওকত আকবর ভিয়েনায় বৈঠকে বাংলাদেশের অগ্রগতি উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, আমাদের ধারণা ২০৪০ সালের মধ্যে চাহিদা বেশি থাকলে বাংলাদেশের ৭৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজন হবে। আর চাহিদা কম থাকলে ৬৯ হাজার মেগাওয়াট। এক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রাজধানী থেকে ১৬০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রূপপুরে নির্মাণাধীন প্রকল্পটির ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।

আইএইএ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হওয়া দেশগুলোর একটি হবে বাংলাদেশ। ‘দ্য ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি) অনুমান করছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে ২০৮০ সালের মধ্যে তলিয়ে যাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর একটি বিশাল অংশ।

বাংলাদেশ সরকার এই হুমকি সামলাতে বেশকিছু জাতীয় নীতিমালা ও পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করেছে। এসব পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, জ্বালানি নিরাপত্তা। জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সহায়তা করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (বায়েরা) চেয়ারম্যান নাইয়ুম চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটির লাইসেন্স পাওয়ার আগে বন্যা ও ভূমিকম্প থেকে সব ধরনের সুরক্ষাসহ সব দিক বিবেচনা করতে হয়েছে।

আইএইএ জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশকে নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ ফ্রেমওয়ার্ক, ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সুরক্ষা ও জরুরি পরিকল্পনার বিভাগগুলো সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে। গত মাসে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশি কর্মকর্তা ও অংশীদাররা রূপপুর প্রকল্পটির উন্নতি পর্যালোচনা ও ২০১৯-২১ সালে সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনায় সম্মত হয়েছে।

আইএইএ’র পারমাণবিক প্রকৌশলী জন হাদ্দাদ বলেন, আমাদের সহায়তা স্বল্প কিন্তু কৌশলগত। আমরা বৈজ্ঞানিক পরিদর্শন, ফেলোশিপ ও প্রশিক্ষণ কোর্সের মাধ্যমে সক্ষমতা নির্মাণে সহায়তা প্রদান করি। আমরা দিকনির্দেশনা দেই, নথিপত্র সরবরাহ করি, অভিযান পর্যালোচনা করি, তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার একটি প্ল্যাটফর্ম দেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close