নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৮

গ্রিন ব্যাংকিংয়ে অর্থায়ন দশমিক ৫ শতাংশ

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রিন ব্যাংকিংয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৫ শতাংশ অর্থায়ন করার কথা থাকলেও মাত্র দশমিক ৫ শতাংশ অর্থায়ন হচ্ছে। এর মধ্যে জীববৈচিত্র খাতে ব্যাংকের অর্থায়ন আরো কম। মাত্র ৮ থেকে ১০ শতাংশ অর্থায়ন হচ্ছে জীববৈচিত্র খাতে। এ অর্থায়নের বেশির ভাগই যাচ্ছে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘হাউ টু ইনকর্পোরেট বায়ো-ডাইভার্সিটি ইস্যুস ইন গ্রিন ব্যাংকিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালায় এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। বিআইবিএম এবং বাংলাদেশ পৌষ যৌথভাবে এ গবেষণা কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী।

কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সাত সদস্যের গবেষণা দলে ছিলেন বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক তাহমিনা রহমান; অন্তরা জেরীন; রেক্সোনা ইয়াসমিন এবং তোফায়েল আহমেদ। এছাড়া ছিলেন বাংলাদেশ পৌষের প্রেসিডেন্ট এম. সানোয়ার হোসেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক আসিফ ইকবাল। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিআইবিএম এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরএস.এম.মনিরুজ্জামান বলেন, ‘গ্রিন ব্যাংকিং এবং জীববৈচিত্র খাতে অর্থায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে।

এরই মধ্যে গ্রিন ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে একটি আলাদা গাইড লাইন তৈরি হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইড লাইনের চেয়ে ব্যাংকারদের সচেতনতা জরুরি।

বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, জীববৈচিত্র খাতে অর্থায়নে পরিবেশের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করতে হবে। এতে প্রাকৃতিক পরিবেশকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। ব্যাংকগুলোকে এ দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (ট্রেনিং) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব বলেন, গ্রিন ব্যাংকিং খাতে একসময় কোন সচেতনতা ছিল না। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এ অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। একইভাবে জীববৈচিত্র খাতেও এক সময় বড় পরিবর্তন আসবে; ব্যাংকারদের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।

পূবালী ব্যাংকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, গ্রিনব্যাংকিং এবং জীববৈচিত্র্য বিষয়ে সব পর্যায়ে সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। আগামী দিনে এ খাতে অর্থায়নে ব্যাংকারদেরও সচেতন হতে হবে। পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।’

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিস এ. খান বলেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও), এজেন্ট ব্যাংকিংসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে জীববৈচিত্র্য খাতে অর্থায়ন করতে হবে। এতে ঝুঁকি কমে আসবে। তিনি বলেন, ব্লু ইকোনমি ব্যাংকিং খাতের অর্থায়নে নতুন খাত সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ব্যাংকাররা দৃষ্টি দিতে পারেন।

বাংলাদেশ পৌষের প্রেসিডেন্ট এম. সানোয়ার হোসেন বলেন, ব্যাংকগুলো সম্পৃক্ত হলে জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হবে। আগামী দিনে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তিনি ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমাইরা আজম বলেন, জীববৈচিত্র্য খাতে অর্থায়নের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা আছে। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, আগামী দিনে গ্রিন ব্যাংকিংয়ে আরও বেশি নজর দিতে হবে। একইসঙ্গে গ্রাহকদের গ্রিন ব্যাংকিং পণ্যে অর্থায়নে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমানোর ওপর জোর দিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close