শাহ্জাহান সাজু

  ২৭ নভেম্বর, ২০১৮

গৃহনির্মাণ ঋণকার্যক্রম

যাচাই-বাছাই হচ্ছে আবেদনপত্র

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে স্বল্প পরিসরে হলেও সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহঋণ দিতে চাচ্ছে অর্থ বিভাগ। এ পর্যন্ত চারটি সরকারি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জমা নেওয়া আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তবে সরকারি চাকরিজীবীদের স্বল্প সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ দেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে কি না; এ দ্বিধায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ এখনো তা কার্যকর করতে পারেনি। যদিও গত ১ অক্টোবর থেকে গৃহনির্মাণ ঋণকার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। এখনো কাউকে এ ঋণ দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

সরকারি চাকরিজীবীদের কম সুদে গৃহঋণ দিতে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই ঋণের সরল সুদহার হবে ১০ শতাংশ। যার মধ্যে ৫ শতাংশ ভর্তুকি দেবে সরকার। এরই মধ্যে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভর্তুকি বাবদ ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে সরকার। দেশে মোট ২১ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছেন, যাদের মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ হচ্ছেন কর্মচারী।

গত ১ অক্টোবর অনলাইনে গৃহনির্মাণ ঋণের জন্য আবেদন জমা শুরু হয়। অভিন্ন আবেদনপত্রে ২৮টি তথ্য চাওয়া হয়, যার মধ্যে ই-টিআইএন নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া প্রাইভেট প্লটের জন্য ৪-৬টি দলিল এবং সরকারি/লিজ পাওয়া প্লটের জন্য ৪-৭ দলিল দিতে হচ্ছে আবেদনকারীদের।

গত ৩০ জুলাই সরকারি কর্মচারীদের গৃহনির্মাণ ঋণ নীতিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে অর্থ বিভাগ। নীতিমালা অনুযায়ী, চাকরি স্থায়ী হওয়ার ৫ বছর পর থেকে এবং সর্বোচ্চ ৫৬ বছর বয়স পর্যন্ত গৃহঋণের জন্য আবেদন করা যাবে। বেতন স্কেলের গ্রেডভেদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

এদিকে, নির্বাচনের আগে গৃহনির্মাণ ঋণ দিলে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হতে পারে আশঙ্কায় আপাতত স্বল্প পরিসরে এ কার্যক্রম শুরু করতে চাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঋণ দিলে নির্বাচন আইনের লঙ্ঘন হবে কি না সে বিষয়ে আমাদের সংশয় আছে। তাই আমরা স্বল্প পরিসরে ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করছি। এরই মধ্যে আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন দুজন চাকরিজীবীকে গৃহঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি তাদের আবেদন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ওই দুজনই প্রথম ঋণ পাবেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, গৃহঋণ নিতে শুধু রূপালী ব্যাংকেই আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ৩ হাজার। যদিও তাদের মধ্যে কতজন ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন সেটা এখই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আবেদনপত্র যাচাই-বছাই করে দেখা হবে এবং সঠিক পদ্ধতিতে আবেদনপত্র পূরণ হলে তাকে ঋণ দেওয়া হবে।

জানা যায়, সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহঋণ আবেদনপত্র এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ছাড়িয়েছে। নির্ধারিত ৪টি সরকারি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে। সম্প্রতি এসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ আবেদনের সংখ্যাসহ সামগ্রিক তথ্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। আর ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব আবেদন যাচাই-বাছাই শুরু করেছে। আবেদন অনুযায়ী নির্দিষ্ট স্থানে রেডি ফ্ল্যাট আছে কি না তা যাচাই করতে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে নির্ধারিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বোর্ড থেকে সেটার অনুমোদন নিয়ে অর্থ বিভাগের গৃহনির্মাণ ঋণ সেলে পাঠানো হবে। পরে সেখান থেকে ঋণের ভর্তুকি নির্ধারণ করে অর্থ বিভাগের সম্মতি নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close