নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩০ অক্টোবর, ২০১৮

উৎপাদনের শুরু থেকে প্রথম ৭ বছর শতভাগ কর ছাড়

দেশের হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদনের শুরু থেকে প্রথম ৭ বছর শতভাগ কর ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়াও পরবর্তী ৩ বছর ৭০ শতাংশ কর অব্যাহতির জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বাংলাদেশ হাইটেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রদেয় কর সুবিধা বাড়ানোর জন্য এসআরও সংশোধন সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করেছে এনবিআর। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ওই সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমান বিষয়ে উল্লিখিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পরিচালিত ব্যবসায়িক কার্যক্রম হতে উদ্ভূত সব আয়ের ওপর প্রদেয় আয়কর থেকে উৎপাদনের সময় হতে প্রথম ৩ বছরের জন্য শতভাগ, চতুর্থ বছরে ৮০, পঞ্চম বছরে ৭০, ষষ্ঠ বছরে ৬০, সপ্তম বছরে ৫০, অষ্টম বছরে ৪০, নবম বছরে ৩০ এবং দশম বছরের জন্য ২০ শতাংশ হারে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। উল্লিখিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রদত্ত সুবিধাগুলো পর্যালোচনার জন্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গত ২ অক্টোবর গণভবনের সভাকক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় বাংলাদেশ হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদনের সময় থেকে প্রথম ৭ বছর শতভাগ এবং পরবর্তী ৩ বছর ৭০ শতাংশ কর অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। বৈঠকের সুপারিশ কার্যকর করতে হলে আয়কর আইনে বর্তমানে জারি করা এসআরও সংশোধন প্রয়োজন। এ অবস্থায় উল্লিখিত সুপারিশের আলোকে বিদ্যমান প্রজ্ঞাপন সংশোধনের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর আওতায় বিদ্যমান প্রজ্ঞাপন সংশোধনপূর্বক নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এসব প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর অবলোকন ও অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলো।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আইন-২০১০ অনুযায়ী সরকার হাইটেক শিল্প স্থাপনের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্টকৃত স্থান অথবা সরকার কর্তৃক অনুমতিপ্রাপ্ত হাইটেক শিল্প স্থাপনের উদ্দেশ্যে ব্যক্তি-উদ্যোক্তা কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত স্থানকে বোঝায়। এছাড়া সরকার কর্তৃক ঘোষিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, টেলিকমিউনিকেশন এবং তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর শিল্পের জন্য প্রতিষ্ঠিত আইটি পার্ক, আইটি ভিলেজ, টেকনোলজি পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, বায়োটেক পার্ক, রিনিউঅ্যাবল এনার্জি পার্ক, গ্রিন টেকনোলজি পার্ক, হার্ডওয়্যার পার্ক ও সায়েন্স পার্কও এর অন্তর্ভুক্ত হবে। অনুরূপভাবে ‘হাইটেক শিল্প’ অর্থ জ্ঞান ও পুঁজি নির্ভর, পরিবেশ এবং ইনফরমেশন টেকনোলজি, সফটওয়্যার টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, রিনিউঅ্যাবল এনার্জি, গ্রিন টেকনোলজি, হার্ডওয়্যার, ইনফরমেশন টেকনোলজি এনাবল্ড সার্ভিসেস (আইটিইএস) এবং রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আর অ্যান্ড ডি) নির্ভর শিল্প। সুতরাং হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি পার্কে স্থাপিত কিংবা স্থাপিতব্য শিল্পের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, কম্পিউটার সফটওয়্যার, কমিউনিকেশন হার্ডওয়্যার, কমিউনিকেশন সফটওয়্যার, আইটি ভিত্তিক সেবা, ডিজাইন অ্যান্ড কনসালটেন্সি, বায়ো ইনফরমেটিকস, মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান, ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যান্ড অ্যাসেম্বলিং প্রডাক্টস, অটোমোবাইল অ্যান্ড মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ, কৃষি জৈব প্রযুক্তি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি। কাজেই হাইটেক পার্কে ওই সব শিল্প স্থাপনে আগ্রহী যেকোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি বিনিয়োগ করতে পারবেন। দেশে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠছে বেশকিছু হাইটেক পার্ক। এরই মধ্যে এসব পার্কে বিনিয়োগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এসব পার্কে জাপানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে’ ৯টি কোম্পানিকে প্লট বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close