নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ অক্টোবর, ২০১৮

ব্যাংকিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার বড় সুযোগ

আর্থিক খাত বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পরামর্শ সেবা প্রদানের এক আদর্শ প্রতিষ্ঠানের নাম বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)। পেশাদারি ব্যাংকিং বিষয়ে শিক্ষার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান এটি। ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান বিআইবিএম।

এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত মাস্টার্স ইন ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (এমবিএম) বর্তমান সময়ে ব্যাংকার হওয়ার উচ্চাকাঙ্খা পোষণ করা তরুণদের কাছে বিআইবিএমের একটি জনপ্রিয় সাবজেক্ট। যেকোনো ব্যাকগ্রাউন্ডের একজন গ্র্যাজুয়েট ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স (এমবিএম) করে সহজেই ব্যাংকে চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন। এমবিএমের শিক্ষা পদ্ধতি বহুলাংশে প্রায়োগিক হওয়ায় এর শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিংয়ে দক্ষ হওয়ার সুযোগ বেশি পান। এ ছাড়া তারা ব্যাংকিং খাতের দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পান।

এমবিএমের সাবেক সব শিক্ষার্থী সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ছাড়াও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের পঞ্চম সেমিস্টার শেষ হলেই বিআইবিএমে জব ফেয়ারের মাধ্যমে ব্যাংকে প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে সরাসরি নিয়োগের সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে ২২টি ব্যাচের ১০০০ বেশি সাবেক শিক্ষার্থী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। মূলত বিআইবিএম আয়োজিত দুই বছর মেয়াদি এমবিএম কোর্সটি করা থাকলে ব্যাংক সেক্টরে চাকরি পাওয়া খুব সহজ। আবার মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ব্যাংকের পক্ষ থেকে বৃত্তি দেওয়া হয়। জানতে চাইলে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী সাংবাদিকদের বলেন, একজন শিক্ষার্থী এমবিএমে ভর্তি হলে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে তাকে সুযোগ্য ব্যাংকার হিসেবে গড়ে তোলা হয়। এ কারণে হাই কোয়ালিটির এসব মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে সব সময় অগ্রাধিকার পায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রায়োগিক এবং তাত্ত্বিকের সমন্বয় করে পড়ানো হয়। ঢাকা স্কুল অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (ডিএসবিএম) আওতায় পরিচালিত হয় এমবিএম কোর্স। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসবিএমের পরিচালক মোহাম্মদ মহীউদ্দিন ছিদ্দিকী বলেন, গবেষণা ও প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ভাবে বিআইবিএম ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত। এমবিএমের কোর্স কারিকুলামে তা প্রয়োগ করা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিংয়ের বাস্তব জ্ঞান এবং দক্ষতা পায়। যা পরবর্তী চাকরি জীবনে সাফল্য বয়ে আনে।

বিআইবিএমে এমবিএমে নতুন ব্যাচ ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যেকোনো বিষয়ে স্নাতক উত্তীর্ণরা এমবিএম ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তার মোট স্কুলিং টাইম হতে হবে কমপক্ষে ১৬ বছর। তবে ভর্তির আবেদনের জন্য শিক্ষাজীবনে কমপক্ষে একটি প্রথম বিভাগ থাকতে হবে এবং কোনো তৃতীয় বিভাগ থাকলে হবে না। স্নাতকদের প্রথম বিভাগ ধরা হবে সিজিপিএ ৩.৫০ থেকে আর এসএসসি ও এইচএসসির ক্ষেত্রে ৪.০০-এর ওপরে প্রথম বিভাগ এবং ৩.০০ থেকে ৪.০০ পর্যন্ত দ্বিতীয় বিভাগ ধরা হবে। প্রতি বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ভর্তি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।

এছাড়া একই যোগ্যতায় এমবিএম (ইভেনিং) কোর্সে প্রতিবছর এপ্রিলে একটি ব্যাচ ভর্তি করা করানো হয়। এ বছর নতুন সেশনে ৫ নভেম্বরের মধ্যে ভর্তির আবেদন করতে হবে। ১০ নভম্বর হবে ভর্তি পরীক্ষা।

বিআইবিএমের এমবিএমের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে উচ্চ পদে কর্মরত এবং এমবিএম অ্যালামনাই সোসাইটির সাবেক সভাপতি এস এম ওয়ারী উল মোর্শেদ বলেন, এমবিএমের কারিকুলাম ওয়েল ডিজাইন্ড। এখানে শিক্ষার্থীরা রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, কমার্শিয়াল ব্যাংকিং, ট্রেড সার্ভিস, ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্টের মতো বিষয় পড়ে আসে। এ কারণে চাকরির ক্ষেত্রে নিয়োগ দাতা ব্যাংকের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পায়।

শুরুতে ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ রূপে গড়ে তোলাই ছিলো বিআইবিএমের লক্ষ্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই লক্ষ্যের বিস্তার হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি উঠতি নতুন ও উদ্যমী শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান। আর তার জন্য চালু হয়েছে এ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম মাস্টার্স ইন ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (এমবিএম)। তাই যারা ব্যাংকিংকে পেশা হিসেবে নিতে চান তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে এই কোর্স।

এমবিএম প্রোগ্রামের জন্য ১ জন শিক্ষার্থীকে ২ বছরে মোট ২০টি বিষয়ে ৬৬ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে ফান্ডামেন্টাল কোর্স, স্পেশালাইজড কোর্স, ক্যাপসটন কোর্স ও ইলেক্টিভ কোর্স। এছাড়া কোর্স ওয়ার্ক, প্রজেক্ট পেপার ও মৌখিক পরীক্ষা রয়েছে। ৪ মাস মেয়াদী মোট ৬টি টার্মে এই কোর্সগুলো সম্পন্ন করতে হয়।

সবাইকেই ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে আসতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদনকারীকে ১৫০ মিনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। পরীক্ষার মধ্যে ৯০ মিনিট বরাদ্দ থাকে এমসিকিউ বা নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর করার জন্য এবং ৬০ মিনিটের মধ্যে লিখিত প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। নৈর্ব্যক্তিক অংশের প্রশ্ন করা হয় ইংলিশ প্রফিসিয়েন্সি এবং ম্যাথমেটিক্স অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটির বিভিন্ন অংশ থেকে। আর লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থীর ফ্রি হ্যান্ড ইংরেজি লেখার ওপর দক্ষতা যাচাই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় প্রথম ২০০ প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত ৫০ থেকে ৮০ জন ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close