বাণিজ্য ডেস্ক

  ১৫ অক্টোবর, ২০১৮

বহির্নোঙরে জাহাজ ভেড়ানোর নতুন নিয়ম

চট্টগ্রাম বন্দরকে অবহিত করে নোঙর করতে হবে

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্যবাহী জাহাজ ভেড়াতে নতুন নিয়ম চালু করছে কর্তৃপক্ষ। এই নিয়মে বন্দর জলসীমায় পৌঁছা যেকোনো পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরকে অবহিত করেই নোঙর করবে। এর ফলে সাগরে জাহাজের দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে, জাহাজ রাখায় শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, নিরাপদ হবে বহির্নোঙর।

কয়েক বছর ধরে বন্দর জলসীমায় জাহাজ আসা অনেক বেড়েছে। কিন্তু বন্দরের নোঙর এলাকা আছে মাত্র তিনটি। এর মধ্যে ‘আলফা অ্যাংকরেজ’-এ সাগরের গভীরতা বেশি থাকায় সব জাহাজের ক্যাপ্টেন সেখানে জাহাজ নোঙর করতে আগ্রহী। এতে প্রতিযোগিতা লেগে এলোপাতাড়ি জাহাজ নোঙর করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এই পরিস্থিতি উত্তরণে প্রথমবার বন্দর এই উদ্যোগ নিল। বন্দরের এই উদ্যোগকে বন্দর ব্যবহারকারী, জাহাজ মালিকরা স্বাগত জানালেও শিপিং এজেন্টরা যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বিরোধিতা করছেন।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান কমোডর বলেন, ‘বিদেশি পাইরেসি রিপোর্টে চট্টগ্রাম বন্দর আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ হয়ে উঠেছে। শতভাগ নিরাপদ করতেই আমরা বহির্নোঙরে নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছি।’

জানা গেছে, বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর নতুন এই আদেশ জারি করেছে এবং গত ১ অক্টোবর থেকে এটি কার্যকর।

নতুন উদ্যোগের বিষয়ে বন্দরের হারবার ও মেরিন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বহির্নোঙর তিনটি অ্যাংকরেজে (আলফা, ব্রেভো ও চার্লি) মোট ৯৩টি জাহাজ ভিড়তে পারে। এর মধ্যে চার্লি অ্যাংকরেজে আট থেকে ৯ মিটার গভীরতার জাহাজ, ব্রেভো অ্যাংকরেজে ৯ থেকে সাড়ে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ এবং আলফা অ্যাংকরেজে সাড়ে ১০ থেকে সাড়ে ১২ গভীরতার জাহাজ ভেড়ানো হয়। কিন্তু বেশির ভাগ জাহাজের ক্যাপ্টেন আলফা অ্যাংকরেজকে বেছে নেওয়াই দুর্ঘটনার মূল কারণ।

চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম বলছেন, গত বছর একটি জাহাজ দুর্ঘটনার কারণে আমেরিকার একটি পিঅ্যান্ডআই ক্লাব চট্টগ্রাম বন্দরকে আনসেফ বা অনিরাপদ বন্দর হিসেবে অভিহিত করেছিল। এ জন্য বাড়তি মাসুলও গুনতে হয়েছিল। আমরা চাই না এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক। একটু উদ্যোগী হলেই বহির্নোঙরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এতে বন্দরের ভাবমূর্তিও বাড়বে। তিনি বলছেন, বর্তমানে বন্দরের ১৬ জন পাইলট প্রতিদিন ২০ থেকে ২২টি জাহাজ বহির্নোঙর থেকে চালিয়ে জেটিতে আনেন। পাইলট সংকট থাকার পরও আমরা বহির্নোঙরে জাহাজের পাইলটিং বিনা মূল্যে দেওয়ার কথা বলেছি।

জানা গেছে, কুতুবদিয়া গভীর সমুদ্রে থাকা জাহাজ থেকে পণ্য নামাতে প্রতি টনে খরচ হয় ৮০০ টাকা আর বহির্নোঙরে বন্দর জলসীমার মধ্যে থাকা জাহাজ থেকে পণ্য নামাতে খরচ হয় ৬০০ টাকা। কিছু শিপিং এজেন্ট বহির্নোঙরে এসে জাহাজ থেকে পণ্য নামিয়ে প্রতি জাহাজেই পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা সাশ্রয় করে। কিন্তু কুতুবদিয়া গভীর সমুদ্রে খালাস করা হয়েছে বলে বাড়তি বিল করে। এই টাকা জাহাজের প্রিন্সিপাল থেকে আদায় করে নেয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close