নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

খেলাপি ঋণে বিপর্যস্ত ব্যাংক খাত

নানাভাবে দেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ। তবে সে তুলনায় আদায় হচ্ছে না। ফলে ব্যাংকিং খাতে রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে খেলাপি ঋণ। এ বছরের জুন পর্যন্ত মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ। খেলাপি ঋণের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি জুন-১৮ প্রান্তিকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৫ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। তার মধ্যে মার্চ পর্যন্ত ১৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা এবং জুন পর্যন্ত ৭৫১ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা।

স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আদায় অযোগ্য হয়ে পড়ায় গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলাভুক্ত হয়েছে ৫৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকার অবলোপনকৃত খেলাপি ঋণ। এই ঋণ যোগ করলে দেশের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া পুনঃতফসিল করা হয়েছে ৮৪ হাজার কোটি টাকা। পুনর্গঠন করা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং ব্যাংকের পরিচালকরা ভাগাভাগি করে নিয়েছে প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার শ। চলতি বছরের জুন শেষে এ ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের ১ লাখ ৫১ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা বিতরণের বিপরীতে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৪২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। যা ওইসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।

ছয় মাস আগে এ ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৩৭ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা যা বিতরণকৃত ঋণের ২৬ দশমিক ৫২ শতাংশ। ২০১৮ সালের জুন শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। এর বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৩৮ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা; যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণকৃত ঋণের ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। ছয় মাস আগে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ২৯ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এদিকে চলতি বছরের জুন শেষে বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ৩৪ হাজার ৮৪ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ২ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা এসব ব্যাংকের মোট বিতরণকৃত ঋণের ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ছয় মাস আগে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ছিল ২ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে, এ সময়ে সরকারি মালিকানার দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। এর বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ৫ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। যা ওইসব ব্যাংকের মোট বিতরণ করা ঋণের ২১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close