নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের সোনা
দুই কারণে নিলাম হচ্ছে না
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমাকৃত সোনার দুই কারণে দীর্ঘদিন ধরে নিলাম হচ্ছে না। প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখা বেশিরভাগ সোনার বিষয়ে এখন মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। দ্বিতীয়ত, নিলাম ডাকা হলে সোনা ব্যবসায়ীরা খুবই কম দাম হাঁকেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নিলাম ডাকা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টের বেশিরভাগ সোনাসংক্রান্ত মামলাই বিচারাধীন রয়েছে এবং বিচারাধীন থাকার কারণে সোনার নিলাম করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে যেসব সোনার বিপরীতে করা মামলার নিষ্পত্তি হয় এবং ভল্টে রাখা সোনা যদি আদালতের মাধ্যমে সরকারের অনুকূলে জব্দ করা হয়, ওইসব সোনা শুরু নিলাম করা হয়। জানা যায়, যেসব সোনার বার বা বিস্কুট আকারে আছে সেগুলো পরীক্ষা করে বিশুদ্ধ সোনা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ওইগুলো সাধারণত বাংলাদেশ ব্যাংক কিনে নেয়। পরে তারা এগুলো রিজার্ভে দেখানোর জন্য ভল্টে রেখে দেয়। পরে নিলামের টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে পরিশোধ করে দেয়। জানা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সর্বশেষ সোনার নিলাম ডেকেছিল ২০০৮ সালে। ওই বছর চার দফায় ৯১ কেজি সোনা নিলাম করা হয়। নিলাম হয়েছিল ২০০৮ সালের ২৩ জুলাই। ওই সময় ২১ কেজি ৮২২ গ্রাম সোনা বিক্রি করা হয়েছিল। একই বছরে তিন ধাপে ২৫, ২৫ ও ২০ কেজি সোনা নিলামে বিক্রি করা হয়। তারপর থেকে এ পর্যন্ত ৯৬৩ কেজির কিছু বেশি পরিমাণ জব্দ করা সোনা আদালতের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অস্থায়ী খাতে জমা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত শুল্ক গোয়েন্দারা অবৈধ পথে আনা প্রায় ৪ হাজার ৬৪৫ কেজি বা ১১৬ মণের বেশি সোনা জব্দ করেছে। তার মধ্যে অধিকাংশই আদালত বাজেয়াপ্ত করেছে। বাজেয়াপ্ত সোনার মধ্যে ২ হাজার ২৯৯ কেজি বা ৫৭ মণ ১৯ কেজি সোনা সমসাময়িক আন্তর্জাতিক দরে কিনে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া প্রায় ৯৬৩ কেজি সোনা নিয়ে এখন আদালতে মামলা চলছে। তাছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নিলামের মাধ্যমে কিছু সোনা বিক্রি হয়েছে। আর আদালতের নির্দেশে শুল্ক পরিশোধসাপেক্ষে কিছু সোনা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, ট্যারিফ কমিশন ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ২০১১ সালে পরিচালিত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈধ উপায়ে দেশে কোনো সোনা আমদানি হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে দুবাই, সিঙ্গাপুরসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে একশ্রেণির চোরাকারবারির সহায়তায় সোনা এনে তা দেশের বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাওনা থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে।
"