পঞ্চগড় প্রতিনিধি
বাংলাবান্ধায় পণ্য আমদানি রফতানি ফের বন্ধ
দেশের সম্ভাবনাময় ত্রিদেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি আবারো অচল হতে চলেছে। অবৈধ সিন্ডিকেটের আধিপত্য, বন্দর কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারি মনোভাব, টাকার বিনিময়ে শ্রমিক নিয়োগ, লোডের টাকা নিয়েও লোড করে না দেওয়াসহ নানা অভিযোগে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও শ্রমিকরা। তারা এবার একজোট হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া লোডিংয়ের টাকা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা। না হয় এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও শ্রমিকরা। অপরদিকে ভুল স্বীকার করে মুচলেকায় সই করেছে বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার। সার্বিক এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রোববার পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে কোনো পণ্য আমদানি-রফতানি হয়নি।
জানা গেছে, গত শনিবার জেলা আমদানি রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের নেতাকর্মী, ব্যবসায়ী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও শ্রমিক নেতারা একজোট হয়ে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোতে যৌথ সভা করেন। সভায় তারা জানান, অবৈধ সিন্ডিকেট, কর্তৃপক্ষের ভয়াবহ স্বেচ্ছাচারিতা ও সীমাহীন দুর্নীতিতে দেশের সম্ভাবনাময় এই স্থলবন্দর দিয়ে তারা আর আমদানি-রফতানি করতে পারছেন না। বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে লোড-আনলোড বাবদ টনপ্রতি ১০৪ টাকা হিসেবে নিচ্ছে, যা কাগজপত্রেও উল্লেখ থাকছে। অথচ অজানা কারণে টাকা নিয়েও তারা মালামাল লোড করে দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীদের বাড়তি টাকা দিয়ে লোড করে নিতে হচ্ছে। এতে তারা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে এই বন্দর দিয়ে আর এই ব্যবসা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তারা আর কোনো পণ্য আমদানি-রফতানি করবেন না। গত ১৪ মে থেকে এ পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে লোডিং বাবদ নেওয়া টাকাও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত চান তারা। না হয় এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ব্যবসায়ী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও শ্রমিক নেতাদের ওই যৌথ সভা শেষে তারা বাংলাবান্ধা ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মামুন সোবহানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লোডিংয়ের টাকা নিয়েও লোড না করে দেওয়ার বিষয়ে একটি লিখিত স্বীকৃতি আদায় করেন। লিখিত অঙ্গীকার নামায় বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মামুন সোবহান বলেন, গত ১৪ মে থেকে লোডিং বাবদ টাকা নিয়েও বাংলাদেশি কোনো ট্র্যাকে আমদানিকৃত পাথর লোডিং করে দেওয়া হয়নি যা আমার জানা মতে সত্য। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করবেন বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে জেলা আমদানি রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম আজম বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে লেবার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য এটিআই লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে হঠাৎ করে ইজারা দেওয়া হয়। মূলত তারা আসার পরই এই বন্দরে অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে।
"