নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ জুন, ২০১৮

সিগারেটের ক্ষেত্রে দুই মূল্যস্তর প্রচলনের দাবি

প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট সিগারেটের মূল্য স্তরকে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও অতি উচ্চ স্তর হিসেবে বিভক্ত করে অতি উচ্চ স্তরের সিগারেটের মূল্য ও কর হার (১০ শলাকা ১০১ টাকা) অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটে বহু স্তরভিত্তিক কর কাঠামোর পরিবর্তে সিগারেটের ক্ষেত্রে দুইটি মূল্য স্তর প্রচলনসহ সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর (স্পেসিফিক ট্যাক্স) আকারে আরোপ করার দাবি জানানো হয়েছে।

গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে তামাকবিরোধী সংগঠন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা), ন্যাশনাল অ্যান্টি টোব্যাকো প্লাটফর্ম এবং তামাকবিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) সম্মিলিতভাবে তামাক কর বিষয়ক বাজেটপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ড. রুমানা হক। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক এতে সভাপতিত্ব করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, বাংলাদেশে নিম্ন স্তরের সস্তা সিগারেটের ভোক্তাই সবচেয়ে বেশি। তাই চূড়ান্ত বাজেটে নিম্ন স্তরের প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের মূল্য ৩৫ টাকা করার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে তিনি প্রক্রিয়াজাতপূর্বক তামাকপণ্যের ওপর রফতানি শুল্ক পুনর্বহাল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ড. রুমানা হক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের চারটি মূল্য স্তর বহাল রাখা হয়েছে। এতে ভোক্তার স্তর পরিবর্তনের সুযোগ অব্যাহত থাকবে। এটি তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করেন তিনি।

জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক বলেন, আমাদের দেশে তামাক উৎপাদন করে অন্য দেশের জনগণকে সস্তায় তামাক ব্যবহারে উৎসাহিত করা অনৈতিক। আমরা কেবল তামাকমুক্ত বাংলাদেশই নয় বরং তামাকমুক্ত বিশ্ব গড়তে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তামাকবিরোধীদের পক্ষ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বহু স্তরভিত্তিক কর কাঠামোর পরিবর্তে সিগারেটের ক্ষেত্রে দুইটি মূল্য স্তর প্রচলন এবং সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর (স্পেসিফিক ট্যাক্স) আকারে আরোপ করার দাবি করা হলেও প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন নেই। নিম্ন স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সম্পূরক শুল্ক মাত্র ৩ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৫৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে এই স্তরের সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি পাবে মাত্র ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। বিড়ি কারখানার মালিকদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে প্রস্তাবিত বাজেটে বহুল প্রচলিত ফিল্টারবিহীন বিড়ির ২৫ শলাকার মূল্য ১২ দশমিক ৫ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকপণ্যের রফতানি উৎসাহিত করার অজুহাতে প্রক্রিয়াজাত তামাকপণ্যের ওপর আরোপিত ২৫ শতাংশ রফতানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং চরম জনস্বাস্থ্যবিরোধী পদক্ষেপ।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, তামাকের আর্থসামাজিক ক্ষতি স্বীকার করেও এ ধরনের দ্বৈতনীতি গ্রহণ শুধু তামাক কোম্পানির প্ররোচনাতেই সম্ভব হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশে তামাক ও তামাকজাত পণ্যের উৎপাদনকেই মূলত উৎসাহিত করা হবে। এটি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বড় বাধা হিসেবে কাজ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist