নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৪ জুন, ২০১৮

১১ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩৫৭ কোটি ডলার

* গত অর্থবছরের ১২ মাসের চেয়েও ৮১ কোটি ডলার বেশি * মে মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার

অবশেষে রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১ হাজার ৩৫৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের ১২ মাসের চেয়েও ৮১ কোটি ডলার বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার সমপরিমাণ মূল্যের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এছাড়া সদ্য শেষ হওয়া মে মাসে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ ডলারেরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। আর ২০১৭ সালের মে মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ১২৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ কোটি ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের এপ্রিলে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৩২ কোটি ৭১ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। সেই হিসাবে তারা এপ্রিলের চেয়ে মে মাসে প্রায় ১৬ কোটি ডলার বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১০৯ কোটি ২৬ লাখ ডলার। গত মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১২৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১১৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি এই রেমিট্যান্স কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রেমিট্যান্স কম আসার কারণ অনুসন্ধান ও হুন্ডির বিষয়ে নিশ্চিত হতে সরেজমিন তদন্তে নামে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই তদন্তে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়টি ধরা পড়ে। তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হুন্ডির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার গ্রাহক ও এজেন্টের একাউন্ট বন্ধের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর প্রতি মাসেই আগের অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স আয় বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপেরে কারণে ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ আবারও ইতিবাচক ধারায় ফেরে। গত অক্টোবরে ১১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে, যা গত সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে ৩০ কোটি ৩০ লাখ ডলার বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রবাসীরা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাইয়ে পাঠিয়েছেন ১১৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। আগস্টে পাঠিয়েছেন ১৪১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বরে ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার ও নভেম্বর মাসে ১২১ কোটি ৪৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। গত মে মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুইটি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১ কোটি ২২ লাখ ডলার। এছাড়া বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০৯ কোটি ৭৫ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১ কোটি ৩৪ লাখ ডলার এসেছে। বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৮ কোটি ৪২ লাখ মার্কিন ডলার। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪ কোটি ৩২ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার ও জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৬৭ ডলার এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার সমপরিমাণ মূল্যের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ৪৯২ কোটি ৬২ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমে ছিল ২১৬ কোটি ১৭ কোটি ডলার বা ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখছে প্রবাসীদের পাঠানো এই বৈদেশিক মুদ্রা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেমিট্যান্স বাড়ার পেছনে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও পণ্য আমদানি বাড়ায় ডলারের সংকট কাটাতে ব্যাংকগুলো নিজেদের প্রয়োজনে রেমিট্যান্স আনতে বেশি উৎসাহী হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist