শাহ্জাহান সাজু

  ২২ এপ্রিল, ২০১৮

অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন

করদাতার সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে

১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন সংখ্যা। গত বছর থেকে অনলাইনে ইলেকট্রনিক বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর বা ই-বিআইএন নিতে পারছেন ব্যবসায়ীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত অনলাইনে ১ লাখ ১৫৩টি ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত হয়েছে।

এ বিষয়ে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে একজন করদাতা ভ্যাট পরিশোধ করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাবসায়িক কর্মকা-ে এটির প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তিনি। তাছাড়া অনলাইনে নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু হয় এক বছর আগে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অনলাইনে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ লাখ ১৫৩টিতে দাঁড়িয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম বছর সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ প্রতিষ্ঠানকে অনলাইন ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ায় তারা মনে করছেন, করদাতারা এই পদ্ধতিটিকে ভালোভাবে নিয়েছেন।

এদিকে, এর আগে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন ও এই পদ্ধতিতে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতার মেয়াদ আরো ৩ মাস বাড়িয়েছে এনবিআর। এর ফলে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত অনলাইনে নিবন্ধন ও রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা। গত ৩১ মার্চ ছিল অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধনের নির্ধারিত সময়সীমা। সম্প্রতি এনবিআর অনলাইনে ব্যবসা শনাক্তকরণ সংখ্যা (ই-বিআইএন) ব্যবহার সংক্রান্ত এক নির্দেশনায় এ সময় বাড়ানোর বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত বছর ২৮ ডিসেম্বর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন-১৯৯১ এর আওতায় বিআইএন ব্যবহার সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে সব ক্ষেত্রে বিআইএনের ব্যবহার সময়সীমা ৩১ মার্চ পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল এখন তা আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হলো।

এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভ্যাট আইন-১৯৯১ এর আওতায় সাড়ে ৮ লাখের বেশি নিবন্ধন রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর সামান্য অংশই অনলাইনে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। ফলে এখনো বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠান ই-বিআইএন গ্রহণ করেনি। এসব বিবেচনায় নিয়ে ব্যবসা শনাক্তকরণ সংখ্যা (বিআইএন) ব্যবহারের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

জানা যায়, সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে করজালের আওতায় নিয়ে আসা, অস্তিত্বহীন বা ভুয়া নিবন্ধন বন্ধ এবং নিবন্ধন গ্রহণের প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, দ্রুততর ও হয়রানিমুক্ত করার লক্ষ্যে এনবিআর গত বছরের ২৩ মার্চ অনলাইন নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করে। ১১ ডিজিটের পুরনো ভ্যাট নিবন্ধন বাতিল করে সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জন্য অনলাইনে ইবিআইএন গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়।

সূত্র জানায়, বিদ্যমান সনাতনী ভ্যাট ব্যবস্থায় সাড়ে ৮ লাখ বিআইএন গ্রহণকারী ব্যবসায়িক সত্তা থাকলেও প্রতি মাসে মাত্র ৩৬ হাজার করদাতা নিয়মিত দাখিলপত্র প্রদান করেন। এতে অনেক অস্তিত্বহীন নিবন্ধিত করদাতা যেমন রয়েছেন তেমনি ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলমান থাকা সত্ত্বেও অনেক করদাতা নিয়মিত দাখিলপত্র প্রদান করেন না বা করজালের বাইরে অবস্থান করছেন। সার্বিকভাবে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ এবং নিবন্ধন গ্রহণের প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, দ্রুততর ও হয়রানিমুক্ত করার লক্ষ্যে মূলত অনলাইন নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করা হয়। অনলাইনে সেবা নেওয়ার জন্য ভ্যাট নিবন্ধন বা ই-বিআইএন নেওয়ার বিষয়টি অনেকটা অনলাইনে কর শনাক্তকরণ নম্বর বা ই-টিআইএনের মতো। এর মাধ্যমে ঘরে বসেই ব্যবসায়ীরা ভ্যাট নিবন্ধন নিতে পারছেন। এরই মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের সনাতন পদ্ধতিতে নিবন্ধন নেওয়া আছে সেসব প্রতিষ্ঠানকেও এখন নতুন করে অনলাইনে পুনঃনিবন্ধন নিতে হবে। বার্ষিক লেনদেন ৩০ লাখ টাকার বেশি হলেই কেবল এই নিবন্ধন নিতে হবে।

সূত্র আরো জানায়, আগে ভ্যাটের যে নিবন্ধন দেওয়া হতো তার নম্বর ছিল ১১ ডিজিটের। অনলাইনে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নিয়মে কেন্দ্রীয়ভাবে এনবিআর থেকে নিবন্ধন নম্বর দেওয়া হচ্ছে এবং তা ৯ ডিজিটের। আগে একই গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ভিন্ন নিবন্ধন নিতে হতো। অনলাইনের আওতায় সব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিবন্ধন অভিন্ন (ইউনিক) হচ্ছে। একটি ব্যবসায়িক গ্রুপের অধীনে যতগুলো সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলোর জন্য শুধু একটি অভিন্ন ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর দেওয়া হয়। মূলত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ভ্যাট নিবন্ধন ওয়েবসাইটের ঠিকানা vat.gov.bd

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist