নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ এপ্রিল, ২০১৮

অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৭.৬৫ শতাংশের বেশি হবে

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘জিডিপি (মোট দেশজ উৎপদন) প্রবৃদ্ধি নিয়ে আমরা যে ফিগার দিয়েছি (৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ) এটাই সঠিক। কারণ আমরা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরোর (বিবিএস) সহায়তায় এই ফিগার দিয়েছি। এখানে নয় মাসের তথ্য রয়েছে। আর বিশ্বব্যাংক দিয়েছে ৫ মাসের তথ্য। তাছাড়া চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি এর চেয়েও বেশি হবে। কারণ সামষ্টিক অর্থনীতির গতিধারা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় আছে।’

অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রশ্নের জবাবে গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। মিট দ্য প্রেসে আরো উপস্থিত ছিলেন বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব মফিজুল ইসলাম, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব জিয়াউল ইসলাম, বিবিএস সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) জুয়েনা আজিজ প্রমুখ।

মুস্তফা কামাল বলেন, বিশ্বব্যাংককে মে মাস পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। তারা এ সময়ের মধ্যে যেসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ও সংশয় প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে আলোচনা করবে। এরপর নিজেদের রিপোর্ট আবার রিভিউ করবে। কারণ বিশ্বব্যাংক ছাড়া আর কেউ আমাদের তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেনি। বিশ্বব্যাংক সব সময় এ কাজটি করে। বছরের প্রথম দিকে প্রবৃদ্ধি নিয়ে তারা দ্বিমত পোষণ করে, বছর শেষে আবার সেটা মেনে নেয়। এটা কেন- প্রশ্ন রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, ‘বিবিএস হচ্ছে ফাইনাল অথরিটি। আর এটা তাদের মানতে হবে। কারো কোনো বিষয়ে সংশয় থাকলে বিবিএসে যান, আলোচনা করেন। বিশ্বব্যাংককে বলব, আপনারা বিবিএসের নিকট বসুন, তারপর তথ্য দিন। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের তথ্যের ফিগার সঠিক। তাদেরও উচিত এগুলো বিশ্বাস করা। আমাদের হিসাব অনুযায়ী ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। এ নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি কথা বলেছে। আরো অনেকে বলছেন এবং বলবেন। তাছাড়া যেখানে সরকারের ব্যত্যয় থাকে সেই বিষয়ে বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠী ও অর্থনীতিবিদরা যে প্রস্তাব দেন, সরকার তা গ্রহণ করে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরের ৯ মাসের হিসাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হয়েছে। অর্থবছর শেষে ১২ মাসের হিসাবে চূড়ান্ত প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। কারণ সামষ্টিক অর্থনীতির গতিধারা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় আছে। প্রবৃদ্ধির হিসাব নিয়ে বিশ্বব্যাংক যেসব প্রশ্ন তুলেছে সেগুলোকে স্বাগত জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, ‘তারা আমাদের প্রবৃদ্ধির হিসাব প্রত্যাখ্যান করেনি, কিছু প্রশ্ন তুলেছে। এগুলোর উত্তরও আছে। প্রবৃদ্ধির হিসাব ছাড়া বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতির ব্যাপক প্রশংসা করেছে। অর্থনীতির উন্নতির জন্য তারা কিছু সুপারিশও করেছে, যেগুলোর বেশির ভাগের সঙ্গে আমিও একমত। তবে বিশ্বব্যাংক বলেছে, অনুন্নয়ন প্রকল্প বাদ দিতে হবে। তবে তাদের এ পরামর্শের সঙ্গে আমি একমত নই। কেননা আমাদের সব প্রকল্পই বিনিয়োগ প্রকল্প। এগুলো নেওয়ার সময় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই হাতে নেওয়া হয়। যেসব প্রকল্প বিশ্বব্যাংকের কাছে অনুন্নয়ন মনে হয়েছে, সেগুলো আমাদের দেশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।’

পরিকল্পনামন্ত্রী আরো জানান, বিবিএস একটি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠিত ও সুনির্দিষ্ট রীতিনীতি মেনেই তারা প্রবৃদ্ধির হিসাব করে। এবার প্রবৃদ্ধির যে প্রাক্কলন করা হয়েছে, সেটি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো কোনো খাতের আট মাসের তথ্যও ব্যবহার করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) পর্যন্ত সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) বাস্তবায়িত হয়েছে ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ সময়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করেছে ৭১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। ওই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৫৩ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। আশা করছি, অর্থবছর শেষে শতভাগ সংশোধিত এডিপিই বাস্তবায়ন হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist