রাজশাহী ব্যুরো

  ২০ মার্চ, ২০১৮

রাজশাহীতে আলুর বাম্পার ফলন হলেও দাম কম

* উৎপাদন খরচ উঠছে না চাষিদের * প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ছে সোয়া সাত টাকা

রাজশাহীর মাঠ থেকে আলু উঠতে শুরু করেছে। জেলায় এ বছর আলু ভালো ফলন হয়েছে। তবে দাম কম হওয়ায় হতাশ কৃষক। উৎপাদন খরচ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। এ বছর প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ছয় থেকে সাত টাকা কেজি দরে। এই দামে আলু বিক্রি করে চাষির উৎপাদন খরচ উঠছে না।

রাজশাহীর পবা, মোহনপুর ও তানোর উপজেলার বিভিন্ন মাঠে দেখা যায়, চাষিরা আলু উঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তানোরের কালনা গ্রামের চাষি সাইদুর রহমান জানান, এ বছর আলুর বস্তা ছোট করে ৫৫ কেজি করে আলু রাখা হচ্ছে। এই এক বস্তা আলু ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ছে সোয়া সাত টাকা।

চাষিরা জানান, আলুর ফলন ভালো হলেও দাম কম। উৎপাদন খরচ উঠছে না। গত বছর ৯৫ কেজির এক বস্তা আলুর দাম ছিল ৯০০ টাকা। গত বছর প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল প্রায় সাড়ে ৯ টাকা। তারা বলেন, এক বিঘা জমিতে প্রায় ৯০ বস্তা আলু উঠছে। প্রতিটিতে ৫৫ কেজি ধরছে। এতে বিঘাপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার আলু পাওয়া যাচ্ছে। পবার আলুচাষি সফিকুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৩৫০ টাকা। এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে এক বস্তা টিএসপি, দুই বস্তা ইউরিয়া, তিন বস্তা পটাশ, জিংক দুই কেজি, দানাদার বিষ দুই কেজি প্রয়োজন হয়। এছাড়া এক বিঘা জমি লিজ নিতে আরো ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। সব মিলে এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এছাড়া এক বস্তা আলু হিমাগারে পৌঁছাতে ১৫ থেকে ২০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। ৫০ কেজির এক বস্তা আলু এবার হিমাগারে রাখতে আরো প্রায় ২০০ টাকা দিতে হবে। এসব দিতে গিয়ে চাষিরা এবার লোকসান গুনছেন। আলুচাষি সোহেল রানা জানান, তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। হিমাগারের চাহিদা অনুযায়ী ৫০ কেজির বস্তা করতে হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এসে ৫৫ থেকে ৬০ কেজি করে বস্তায় আলু নিচ্ছেন। তারা আলুর দাম প্রতি বস্তা ৪০০ টাকার বেশি দিচ্ছেন না। তিনি আরো বলেন, আলুর ভালো ফলন হয়েছে। তবে আলু দাম অনেক কম। গত বছর আলু উঠার সময় ১০ টাকার ওপরে দাম ছিল। এ বছর আট টাকার নিচে আলুর দাম।

হিমালয় হিমাগারের ব্যবস্থাপক হারুন-অর-রশিদ জানান, হিমাগারে আলু আসতে শুরু করেছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আলু পুরোদমে হিমাগারে চলে আসবে। গত বছর প্রতি বস্তা আলু হিমাগারে রাখার জন্য ৩৬৫ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এ বছর বস্তা ছোট ও খরচের কারণে ব্যবসায়ীদের লোকসান হতে পারে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক দেব দুলাল ঢালি জানান, ‘গত বছরের চেয়ে তিন হাজার হেক্টর জমি কমে এবার ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। তবে ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ২৫ টন আলু উৎপাদন হয়েছে। এতে প্রায় ১০ লাখ মেট্টিক টন আলুর আবাদ হবে। দাম কিছুটা কম হলেও শেষ পর্যন্ত চাষিদের লোকসান হবে না বলে মনে করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist