নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

চোরাকারবারিদের হাতকড়া পরাতে চায় শুল্ক গোয়েন্দা

চোরাচালানের অপরাধে গ্রেফতার ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুল্ক গোয়েন্দারা হ্যান্ডকাপ বা হাতকড়া পরানোর অনুমতি চেয়েছেন। এজন্য সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর হাতকড়া ক্রয় এবং তা ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি পাঠিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে এনবিআরের শুল্ক বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি বোর্ডে এসেছে। হাতকড়া পরানোর বিষয়ে কোনো ধরনের দিকনির্দেশনা দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে এনবিআর কাজ করছে।

সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন চেকপোস্টে স্বর্ণ এবং অবৈধ মালামাল পাচারের অপরাধে শুল্ক গোয়েন্দারা প্রায়ই চোরাচালানকারীদের গ্রেফতার করছেন। পরে গ্রেফতার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা, আদালত বা হাসপাতালে নেওয়া হয়। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় আসামির হাতকড়া পরা না থাকায় পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে আসামি যেন পালিয়ে যেতে না পারে, এজন্য হাতকড়া পরানোর অনুমতি চাওয়া হয়েছে এনবিআরের কাছে। জানা যায়, কাস্টমস আইন, ১৫৬-এর ৫ ধারা মোতাবেক তদন্ত করার স্বার্থে থানায় পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) যে ক্ষমতা ভোগ করেন, শুল্ক গোয়েন্দাকে একই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনেও শুল্ক গোয়েন্দাদের আসামি গ্রেফতারের পাশাপাশি তদন্ত করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। অর্থাৎ আইনে হাতকড়া পরানোর ক্ষমতা দেওয়া আছে। এখন এনবিআর থেকে তা প্রয়োগের অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, হাতকড়া পরানো থাকলে গ্রেফতার আসামি অত্যন্ত সুরক্ষিত থাকে। পালিয়ে যাওয়ার কোনো ধরনের ঝুঁকি থাকে না। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে হাতকড়া পরানোর অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

এদিকে চোরাচালান প্রতিরোধ এবং রাজস্ব সংরক্ষণে শুল্ক গোয়েন্দা প্রতিনিয়ত গুরুত্বপূর্ণ ও দৃশ্যমান কাজ করছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চেকপোস্টগুলোতে স্বর্ণ এবং অবৈধ মালামাল চোরাচালানের দায়ে সন্দেহভাজন পাচারকারীকে আটক এবং আটক-পরবর্তী মালামাল শুল্ক গুদামে প্রদানসহ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে আসামিদের থেকে পণ্য উদ্ধারে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নেওয়া ও এক্সরেসহ অন্যান্য স্ক্রিনিং করতে হয়, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। জানা যায়, বর্তমানে চোরাচালানের বিভিন্ন মামলার তদন্তভার শুল্ক গোয়েন্দাদের দেওয়া হচ্ছে। এজন্য চোরাচালান নিয়ে কাজ করার ঝুঁকিও আগের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেড়ে গেছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে এনবিআরের কাছে আসামিদের হাতকড়া পরানোর অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। শুল্ক গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন নথিপত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে (আগস্ট ২০১২ থেকে আগস্ট ২০১৭) দুই টন চোরাই সোনা জব্দ করা হয়েছে। এর বাজারমূল্য প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা। পাঁচ বছরে সোনা পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে বিদেশিও রয়েছেন। এ সময় বিমান ও সিভিল অ্যাভিয়েশনের কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে আসামিদের প্রায় অধিকাংশই জামিনে বেরিয়ে গেছে। অনেকে জামিন পাওয়ার পর পলাতক থেকে আবারও সোনা চোরাচালানে যুক্ত হয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত শুল্ক গোয়েন্দারা সোনা জব্দের ঘটনায় ২৩৪টি মামলা করেছেন। এসব মামলায় ৩১৫ জনকে আসামি করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist