নিজস্ব প্রতিবেদক
কৃষি খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে
দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে কৃষি খাতে খেলাপি ঋণ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ২২২ কোটি টাকা। এর ৯০ ভাগই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে (২০১৭-১৮) কৃষি ও পল্লী খাতে মোট ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১২ হাজার ৭০২ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যা পুরো অর্থবছরে বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার ৬২ দশমিক ২৭ শতাংশ। তবে ঋণ বিতরণের সঙ্গে এ খাতে বাড়েছে খেলাপির পরিমাণও। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপির পরিমাণ ৫ হাজার কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের ২ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে হবে পল্লী অঞ্চলে। অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতেই এ নির্দেশনা জারি করা হয়। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিয়ম চালু করে।
বিগত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) এ খাতে ঋণ বিতরণ হয় প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কৃষি ঋণে মোট খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২২২ কোটি টাকা। যার প্রায় ৯০ ভাগই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর। এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৬১ কোটি টাকা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ২০২ কোটি টাকা কৃষি ব্যাংকে। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা সোনালী ব্যাংকে। আর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৩৫ কোটি টাকা।
কৃষি ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে এই সময়ে কয়েকটি ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম, আবার কিছু ব্যাংক কোনো ঋণই বিতরণ করতে পারেনি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়ে ব্যাংক আল ফালাহ, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও সীমান্ত ব্যাংক কোনো ঋণ বিতরণ করেনি। এছাড়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম বিতরণ করেছে মধুমতি ব্যাংক ৮ দশমিক ২১ শতাংশ এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ বাড়াতে সবসময়ই ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ না করলে ব্যাংকগুলোকে জরিমানা করা হবে। এসব বিষয় মাথায় রেখে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করছে ব্যাংকগুলো। তবে খেলাপি ঋণ আদায়েও তাদের জোর দেয়া হয়েছে বলেও জানা তিনি।
"