তারুণ্য ডেস্ক

  ০৫ জুলাই, ২০১৭

তরুণ বিজ্ঞানী সাইফুলের কীর্তি

ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল চিকিৎসায় নতুন মাত্রা দিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ বিজ্ঞানী ড. সাইফুল ইসলাম। তিনি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক। এর মধ্যে তিনি পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

২০১১ সালে ‘সিক্সথ এশিয়ান কনফারেন্স অন ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন ৬১ দেশের ৪ হাজার ৩০০ বিজ্ঞানী। এর আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব মাইক্রোবায়োলজিক্যাল সোসাইটি। সেখানে এশিয়ার তরুণ ল্যাব বিজ্ঞানী পুরস্কার ২০১১ পান বাংলাদেশের সাইফুল ইসলাম। এরপর তিনি ২০১৪ সালে পান ‘ইয়ং রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড’। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশি মুরগি খাবারের জন্য যত্রতত্র চরে বেড়ায়। ময়লা-আবর্জনা, এমনকি প্রাণীর বিষ্ঠা থেকেও খাবার সংগ্রহ করে। কিন্তু তাদের পেটের রোগ-বালাই কম হয় বা হয় না বললেই চলে। তা ছাড়া আমাদের দেশীয় মোরগ-মুরগির রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক অনেক বেশি। দীর্ঘ গবেষণার এক পর্যায়ে দেশীয় মোরগ-মুরগির অন্ত্রে বিশেষ ধরনের উপকারী অণুজীবের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হই।’ গবেষণা থেকে তিনি দেশি মুরগি থেকে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া (উপকারী অণুজীব) পৃথকীকরণ ও তাদের চিহ্নিত করেন। এই গবেষণার ফল ও উপকারী অণুজীব বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনফরমেশন ইনস্টিটিউট, সায়েন্টিফিক রিসার্চ এবং ওপেন এক্সেস লাইব্রেরির যৌথ উদ্যোগে চীনের পেইচিংয়ে আয়োজিত ব্যাকটেরিওলজি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০১৪-এ আমন্ত্রণ পান। সেখানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে পান ‘ইয়ং রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড ২০১৪’ পুরস্কার।

২০১৫ সালে থাইল্যান্ডের পাতায়া সিটিতে অনুষ্ঠিত ‘পঞ্চম ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সাসটেইনেবল অ্যানিমাল অ্যাগ্রিকালচার ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিজ (এসএএডিসি ২০১৫)’ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দুটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ও ‘এসএএডিসি ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন। এটি বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্য থেকে সর্বোচ্চ ২০ জন অনূর্ধ্ব-৪০ বছর বয়সী তরুণ বিজ্ঞানীকে দেওয়া হয়। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সাইফুল ইসলাম এই সম্মাননা পান। সর্বশেষ তিনি গত মার্চে থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত প্রাণিজ আমিষ উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘ভিভ এশিয়া ২০১৭’-এর বিভিন্ন সেমিনার ও সভায় অংশ নেন। সেখান থেকে মার্চে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে অনুষ্ঠিত ‘এশিয়া রিজিওনাল ওয়ান হেলথ অ্যান্ড জুনোসিস’বিষয়ক আন্তর্জাতিক কর্মশালায় বাংলাদেশে ওয়ান হেলথ, প্রাণী স্বাস্থ্য সুরক্ষার ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

জাপানের হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. সাইফুল ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়েছেন পুরো পাঁচ বছর। তার গবেষণার বিষয় ছিল-‘অন্ত্রস্থ ব্যাকটেরিয়া এবং তাদের গঠন ও নিয়ন্ত্রণে শরীরবৃত্তীয় নির্ণায়কের ভূমিকা’। সেখানেই ড. সাইফুল উদ্ভাবন করেন ডায়াবেটিস, মুটিয়ে যাওয়া, রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল এবং অন্ত্রস্থ ব্যাকটেরিয়ার পারস্পরিক সম্পর্ক মূলত একটি শরীরবৃত্তীয় নিঃসরণ (পিত্তরস; যার নিঃসরণ উচ্চমাত্রার চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তার এই আবিষ্কার এশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার

বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও কর্মশালায় উপস্থাপিত হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রবন্ধ আমেরিকার প্রভাবশালী জার্নাল Gastroenterology-তে প্রকাশিত হয়েছে। শেকৃবিতে যোগদানের আগে তিনি বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএলআরআই) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দেশে-বিদেশে ২৫টিরও অধিক গবেষণা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist