কবিতা
ওয়াহিদ জালালের
আত্মকাব্য
১.
ঘুমের শেষে আমাকে ডাক দিও না
ঘুম ভাঙলে নীরব ভালোবাসায় কাঁদে
পিরিতের ময়না।
২.
এক দিন জলকে স্পর্শ করে দেখি
সে তোমার মতোই খুব নরম,
আমি চোখের সেই এক ফোঁটা জলকে
তুমি ভেবে
সমুদ্রকে আর দেখতে যাই না।
৩.
ভালোবাসা কি? কখনো জানতে চেও না
ভালোবাসা হলো দুখিনীর নগরে
কিংবা অন্ধকারে হারানো প্রাণের কামনা।
হয়তো তুমিও ভালোবেসেছো
আজ বুকের কলসে কাঁপে যাচিত দুঃখের হাহাকার
শিউলিঝরা আলোড়নে সাহসা হলে বিনীত,
মোমের কান্না গলে পড়ে অন্ধকারে
মাতাল ঝড়ের রাতে প্রাণ আহত।
অসীম সাহস;
ছেঁড়া তসবিহদানায় পবিত্র প্রার্থনার মতো
আলোর ফেরেস্তা তোমার অতল চোখে
ডানা মেলে ভাসে,
তীব্রতা অসহায় করে, কোন নামে ডাকবে?
এখানে নিশ্চিত কতকাল বিদীর্ণ বংশে
স্বপ্ন বহুদূর তোমারে দেখে হাসে।
অনিন্দ্য নরম অনিদ্রা ঘুমিয়ে আছে
তীরের ফলার মতো বুকে রাখে মুখ,
বাতাসের ফেনায় তোমার নামের বুদ্বুদ
তুমি কী চাও ওয়াহিদ?
এই নিশ্বাস আবার পাহাড় হয়ে ফিরুক?
প্রাণের বিষণ্ন উঠোন
জিজ্ঞাসার নখ বুকের মাংস ছিঁড়ে-ফেঁড়ে
বিরহ অষ্টমীতে দহনের পুষ্পিত কাননে
এক রকম রক্ত দিয়েই লিখে ভালোবাসা।
রাস্তাটি নিজেই খুঁজে বের করেছি,
যে পথ দিয়ে হেঁটে গেলে ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়াব
সত্যতে মধুরতা অছে, তবু বুঝিনি
সীমাহীন মাঠের আয়তন।
সকাল-বিকাল শুধু মানুষ মানুষ খেলা।
বাতাসের মতো উৎসুক মনের উঠোন,
মানুষের ভাষার ভেতর জলের খেলা,
এখানে বৃষ্টি হয় না, রোদের বুকে নিঠুরতার গন্ধ
আত্মা পিপাসিত হলে কে তার হাতটি বাড়িয়ে
তৃষ্ণা মিটায়? তুমি তাকে হাতেনাতে ধরতে চাও, ওয়াহিদ?
যেন, ইন্দ্রের সারথি একটা বড় মাপের নকশা
গরিবের জোগাড় করা অন্নের মতো।
শেষ বিদায়ের ভেতর একটি প্রেমিক মন
চিরকাল নিজেকে চরায়,
কামনার হক কথা এখানে নেই,
কলঙ্কের জবানে বাউড়ি বাতাসের সেলাই,
হাতের আঙুলে তোমার স্পর্শ,
তোমার চলে যাবার সময় এই আঙুল একবার
চোখের জল মুছে ছিল,
আজ আর কীসের এত জিজ্ঞাসা?
বুকে খুব কষ্ট হলেই তো নীরব থাকা,
চিৎকার করে কি কাউকে কাছে যায় রাখা?
"