দীলতাজ রহমান
রাত-অন্ধ বিড়াল
প্রথমে খাঁড়া কটি টান
তারপর নাকসহ ঠোঁট আঁকা হলে
টান কটি বিড়ালের গোঁফ হয়ে গেল।
উঁচু দুটি কানে সম্পূর্ণ বিড়াল দাঁড়াল
দুই চোখ আঁকা হলে ঢুঁ খেল আলো।
চারটি পা আঁকা হতেই বিড়াল দিতে চাইল ভোঁ দৌড়!
এক লাফে পটুয়া খামচে ধরে বললো, ‘এখনো লেজ আঁকা হয়নি তোর!’
ইতস্তত টানটি পরখ করার আগেই তুলির বিড়াল
মিশে গেল প্রাণদ বিড়ালের ভিড়ে!
কিন্তু ‘আমি কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না অথচ অন্যেরা ভজছে আলোর বন্দনা!’
নিকষ অন্ধকারাচ্ছন্ন হতেই বিড়ালটির নিজের কাছে নিজেরই ঘটলো
এমন সয়ম্ভূ প্রকাশ!
তীব্র আঁধার চিরে বিবৃত্ত বিড়াল তপ্ত নখরে ফোটাতে থাকে যে আরক্ত কিংশুক,
প্রস্ফুরিত সেই অনুষঙ্গেরই ভৈরবী অনুরণন অষ্টনাগ, লতা-তরু শোনে বিকীর্ণ
পথের পদচ্ছাপে পাঁজর টুকেÑ
‘অন্ধকারে দেখার আলোটুকু শুধু কেন গুঁজে দাওনি হে বেভুল অন্তর!’
শুধু এতটুকু ভুলদোষে পটুয়া বিড়ালটির প্রাণে সুর হয়ে বেজে ওঠে সপ্রাণ
এবং
কাঁটা তড়পানো বিড়ালটির বিদুন্তুদ কণ্ঠে অবিরাম উচ্চকিত হতে থাকে
খরস্নায়ু আর্তনাদÑ ‘তোমার তাবৎ সৃষ্টিশক্তি বধ করো পরিণামহীন, রাতান্ধের
এই দুচোখে..., হে আমার স্রষ্টা!
...অবলম্বিত ও অধিকৃত নয় যে আলো,
সে আলো চাইলেও যে জনক বা প্রেমিকের মতো কারো চোখে
হতে পারে না মোহনীয় কাজল টান
অস্তিত্বের ওইটুকু খর্বত্বেই ভীষণভাবে জেনে গেছে সে
রাত-দিন সমান আলোর কেউ-ই নয় তার মতো অতিদর্শী প্রবল বিড়াল!
"