মাহবুবুল আলমের
শ্রাবণের গুচ্ছকাব্য
১. বিষাদের পাণ্ডুলিপি
শ্রাবণের বেদনার মতো রঙহীন বিষাদে মোড়া
সময় এঁকে যায় হৃদয়ে কষ্টের আঁকিবুঁকি
স্মৃতির উঠোনে বিষাদের ঝরাপাতার স্তূপ
একা একা লিখে যায় বিষাদের পাণ্ডুলিপি।
ওহে মেঘ যেখানেই যাও সাথে করে নিয়ে যাও
অই দূর পাহাড়ের দেশে উত্তর মেঘের বেশে
নিয়ে যাও ঘনঘোর তোমার ডানায়Ñ
জীবনের কষ্টভার বইতে যে পারি না আর।
২. সে নাকি ভালো নেই
একদিন যারে ভেসেছিলাম ভালো
সেও নাকি নেই ভালো, বলে গেল
শ্রাবণের মেঘ, সব আবেগ তার
ধুয়ে নিয়ে গেছে অবিরাম অশ্রুজল
কেড়ে নিয়ে গেছ স্থবির নীলিমা।
তাই তার মনে জ্বলে কষ্ট অনির্বাণ
বিরহী ডাহুক ডাকে ক্ষয়ে যাওয়া
বোধের ভেতর, কষ্টের আড়ালী ঘাসে
কেড়ে নিছে সব ক্ষেতের আবাদ।
ভেতরে তার কষ্টের জলছায়া কাঁপে
বিরহের দহনে পোড়ে শ্রাবণের মেঘ
বিবাগী হয়ে চলে যায় দূরে, চলে যায়
নিরুদ্দেশে উত্তরের হাওয়ায়।
৩. ওগো তৃষ্ণা আমার
শ্রাবণের এই ভরদুপুরে
আসবে কি কেউ প্রবল ঝড়ে,
মনের গোপন চাওয়াগুলো
পারবে কি কেউ উড়িয়ে নিতে
বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিতে
খাঁ খাঁ মনের ইচ্ছেগুলো।
এখন এমন ভাটার টানে
আসবে না কেউ প্রবল বানে
ভাসিয়ে দিতে, আসবে শুধু
নগদ নিতে নিদানকালের
কষ্টগুলোর ভাগ নেবে না
এমন কোনো প্রাণের স্বজন।
সব বুঝেও তা বোঝে না
অবুঝ এ মন, এক মুঠোও
সুখ দেবে না, বাদল জলে
কেউ দেবে না শীতল পরশ
ভিজিয়ে উধাও করবে না
কেউ শ্রাবণের এ তপ্তদুপুর।
৪. পিপাসার জল
শ্রাবণের মেঘের মতো মনেও কেন
মেঘ জমে উড়ে বেড়ায় ঘুরে বেড়ায়
বিষণœতা বুকে নিয়ে কখনোবা
উড়ে যায় মেঘের ভেলায়।
এ-মন চিল হয়ে দুপুরের তপ্তরোদে
পিপাসার জল খোঁজে যায়
একা একা চিৎকার হাহাকারে
চলে যায় দূরে বর্ষার ছন্দ ঘনঘোর
তেজ সেও গেছে চলে স্পর্শের বাইরে
সেও তাই বয়ে বেড়ায় শ্রাবণের কষ্টভার।
"