ওয়াহিদ জালাল
পদাবলি
নিখাদ রক্তের মানুষ
রক্তের চাপা পড়ে বৃক্ষ আর কুসুমের যে অমলিন সুবাস
বাতাসে ঘুরে বেড়ায় তার নাম ভালোবাসা।
জন্মের চাদরে জীবনের আব্রু ঢেকে রাখে অনন্তকাল,
বয়স বাড়ে, চোখের ভেতর স্বপ্নের দিঘি বড় হতে থাকে,
সেই জলে সাঁতার কাটতে থাকে হাতেগোনা
কিছু মানুষের সার্থক জীবন,
জলের রঙ বদলায় তারা কখনো বদলায় না।
আমি সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কথা বলছিলাম,
তার রক্তে কোনো খাদ ছিল না,
শরীরে বহমান রক্তের পূর্বসূত্র একদিন আমাদের
প্রিয় বাংলাদেশের জন্য ঝরিয়ে গেছেন ত্যাগী ভালোবাসায় অকৃত্রিম বিশ্বাসে।
আমি তাকে জানতাম, দীর্ঘদিন দেখেছি তাকে খুব কাছে থেকে, মানুষটি যেন
ছোট্ট শিশুর সারল্যের ভরা ভালোবাসা দিয়ে কাছে রাখতে জানতেন।
প্রতিদিনের কাজ সেরে আমাদের দেখা হতো
হ্যানবারী স্ট্রিটের একটি ঠিকানায়,
আজও অমলিন সেই পথের ধুলা, শুধু তার শূন্যতায় ভিজছে প্রতীক্ষার কুয়াশা ।
দুই হাজার ষোলো সালে শেষ দেখা আমাদের হয় ঢাকায়,
বলেছিলেন লন্ডন এলে দেখা করিস, এসেছেনও কয়েকবার,
ফোনালাপ হয়েছে আমাদের, দেখা হয়নি। দেখা হলে হয়তো
আরো মানুষের গল্প শুনতাম তার কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে,
হয়তো আবার আমাদের নিয়ে নতুন কোনো ভবিষ্যতের স্বপ্ন আঁকতেন,
বলতেন, যা সত্য তা মেনে নিতে দ্বিধাবোধ করো না,
জীবন তো একটাই, তাকে জীবনের কাছাকাছি রেখে যাও।
ছায়াগুলো বুঝি চিরকাল এভাবেই সরে যায়!
আর আমাদের ছেড়ে যায় সময়ের প্রখর রুদ্র দাহে,
তবু চলে যেতে হয়, নিয়মের আগরবাতি জ্বলে ওঠে,
পুড়ে পুড়ে সুবাস ছড়ায় আর সুরভিত রাখে আমাদের ভুবন চিরকাল।
"