শেখ আলমগীর হোসেন
তোমার সারথি হবো
১.
আমি তোমাকে সুখী করতে পারবো কিনা জানি না,
তবে তোমাকে একটা সুখপাখি কিনে দিতে পারবো
যে তোমার সাথে সারাক্ষণ কথা বলবে সময়ে-অসময়ে।
সুুখের দিনগুলোকে আরো রাঙিয়ে তুলবে
কষ্টের সাথী হবে! আর শুনবে তোমার সব জমানো কথা।
অনেক কষ্টে যখন পৃথিবীকে অসহনীয় মনে হবে,
সময় তোমাকে এড়িয়ে চলবে; তখন সে পরম মমতায় বলবে,
কষ্ট পাচ্ছো কেন? আমি আছি না!
আমাকে বল তোমার না বলা সব কথা।
হয়তো তোমার সব কষ্ট কমাতে পারবো না,
তবে শোনার মতো ঢের সময় আমার আছে
তোমাকে সান্ত¡না দেওয়ার মতো যোগ্যতা আছে,
আস্থা রাখতে পারো আমাতে!
নেবে সেই সুখপাখি?
তাহলে এসো আমার কাছে।
২.
আমি তোমাকে ইউরোপ আমেরিকা ঘোরাতে পারবো কিনা জানি না,
তবে তোমাকে নিতে পারবো রাঙামাটির দেশে
যেখানে পাহাড় আর মেঘের মিলনমেলা।
পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে তুমি হাঁটবে।
মেঘগুলো তোমার সারা অঙ্গ জড়িয়ে ধরবে
আর চুলগুলোকে অল্প ভিজিয়ে দেবে।
তোমার খোলা ভেজা চুলে আমি নাক ডুবাবো
আর আলতো স্পর্শ করে বলবো, পাগলি আমরা এখানে থেকে যাবো
ফিরে যাবো না ওই যান্ত্রিক দেশে! মেঘের রাজ্যে ঘর বানাতে চাও?
তাহলে চলে এসো আমার কাছে।
৩.
আমি তোমাকে টেমস দেখাতে পারবো কিনা জানি না,
তবে দেখতে পারবো আমার গ্রামের ছোট্ট খরস্রোতা নদী।
ছোট্ট নৌকায় তোমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবো, আমি নৌকার হাল ধরবো
আর তুমি নৌকার একপাশে বসে পা ভেজাবে নদীর পানিতে,
নদীর ঢেউয়ে যখন নৌকা দুলবে, তখন তুমি চিৎকার দিয়ে উঠবে!
আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে বলবো, ভয় পাচ্ছো কেন? আমি আছি না
আমার বুকে মুখ লুকিয়ে তখন বলবে, আমি তো সাঁতার জানি না।
আমি বলবো, আমি সাঁতার সেখাতে পারবো না;
তবে তোমাকে কাঁধে নিয়ে সাঁতরাতে পারবো
পারবো তোমার দু:সময়ের সাথী হতে।
গ্রামের সেই ছোট্ট নদীতে পা ভেজাতে চাও?
তাহলে চলে এসো আমার কাছে!
৪.
আমি তোমাকে স্বপ্ন দেখাতে পারবো কিনা জানি না,
তবে তোমার স্বপ্নের সারথী হতে পারবো।
তোমাকে উৎসাহ দিতে পারবো, বলতে পারবো ভয় পেয়ো না;
তুমিই পারবে যখন একটি স্বপ্ন ভেঙে যাবে, নিজের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলবে;
তখন ভরসা হিসেবে আমাকে পাবে তোমার কাছে।
স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায় ক্লান্ত শরীরে যখন ঘুমহীন থাকবে,
তখন কপালে হাত রেখে বলবো, কি হয়েছে তোমার? ভেঙে পড়ছো কেন?
সামনে তোমার জন্য তো ভালো কিছু অপেক্ষা করছে
যত বড়ই ঝড় আসুক না কেন, আমি তোমাকে ছেড়ে যাব না
কাঁঠালের আঁঠার মতো লেগে থাকবো।
এতটুকু বিশ্বাস আমার ওপর রাখতে পারো।
স্বপ্নের সারথি হতে চাও?
তাহলে চলে আসো আমার কাছে।
তোমার সুখের সময় না ডাকলেও, দুঃখের সময় ডেকো!
যতদিন থাকবে এ দেহে নিঃশ্বাস,
ততদিন তোমাকে সুখী করতে না পারলেও, হবো না দু:খের কারণ
এ আমার বিশ্বাস।
"