আকিব শিকদার
আত্মহত্যায় প্রতিবাদ
ঘুমন্ত সন্তানের হা করা মুখে
স্তন গুঁজে দিয়েছিল জরিনা। ছেলেটা মায়ের বুক
মুখে পুরে চুষছে, যেন বহুকাল তৃষিত বাছুর
গাভীর ওলান থেকে ফেনা তুলে দুধ নিচ্ছে টেনে।
আদুরে বেড়াল যেমন পিঠে হাত বুলালে
চোখ বুঁজে রাখে, মমতার আবেশে
আধাশোয়া জরিনার দুটি চোখ তেমনি নির্মিলিত।
দলছুট মুরগিকে ঝোপের আড়ালে পেয়ে
চোখ চকচক করে ওঠা শিয়ালের ললুপ দৃষ্টি নিয়ে
জুলমত সামনে দাঁড়াল।
বিধবা নারীর যৌবন ছুঁয়ে একটু উত্তাপ
লুটে নিতে চায় তার পুরুষ্ট আঙুল।
সুগন্ধী তেল-সাবান, নতুন শাড়িÑ কত প্রলোভনে
কতকাল সে যে আছে প্রতীক্ষায়!
দরজায় ছিটকিনি এঁটে জরিনার দিকে দুই পা বাড়াতেই
মেঘে মেঘে অশনিসংকেত, দেবীর কোঁকড়া চুল
যেন রূপ নিলো ফনা তোলা স্বর্পে।
জুলমতের গলায় বটির কোপ, কদমছাটা চুলময় মাথাটা
ছিটকে পড়লো চৌকির পায়ার পাশে; লাথি খেয়ে
গোলপোস্টের দিকে উড়ে চলা বলের মতো।
তৃষিত সন্তানের গায়ে ছিটকে পড়ল
অসুরের উষ্ণ রক্তছলক, বোতল উপচেপড়া আলতা যেমন।
জরিনা এবার কেরোসিন ঢেলে জ্বালিয়ে দেবে
ঘাড় কাটা জুলমতের লাশ, ঘরবাড়ি, জীবন্ত সন্তান
এবং বিধবার শাড়ি গায়ে নিজেকে নিজেই।
"