চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে শোকের ছায়া কেঁদেছেন প্রধানমন্ত্রীও
এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাটি ও মানুষের নেতা চট্টগ্রামের এই সাবেক মেয়র স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছেন। বহুবার কারাবরণ ও নির্যাতন সহ্য করলেও মাথা নত করেননি মহিউদ্দীন চৌধুরী। চট্টগ্রামের মানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠকের অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, গণমানুষের অন্তরে এই বর্ষীয়ান জননেতা চিরদিন বেঁচে থাকবেন। এ ছাড়া এ বি এম মহিউদ্দিনের মৃত্যুতে চট্টগ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। দলমত নির্বিশেষে সব মহল এই নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
তার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর চশমা হিলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনে তার পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি জানান, ‘ঢাকাতেও মহিউদ্দিন চৌধুরীর জন্য অনেক মানুষ কাঁদছেন (এ সময় কাঁদেন ওবায়দুল কাদেরও)। অনেক মানুষ শোক করছেন। আমাদের নেত্রীও (শেখ হাসিনা) আজ ভোরবেলায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।’
শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিলেও তিনি তাতে রাজি হননি বলে জানান ওবায়দুল কাদের। ‘আমাদের নেত্রী তাকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হতেও বলেছিলেন। তিনি রাজি হননি।’ জানান তিনি।
এদিকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া। হাসপাতালে অনেককেই চোখ মুছতে দেখা যায়। এই আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনসহ পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন হাসপাতালে। মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান স্বজন ও সহকর্মীরা। এ সময় শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো বন্দরনগরী। এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর এভাবে চলে যাওয়া অপূরণীয় ক্ষতি বলে উল্লেখ করেন তারা। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘যে অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন, আমরাও তার পথে চলার চেষ্টা করব।’ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘এই মহান নেতার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন।’ মেয়র আ জ ম নাছির বলেন, ‘শুধু চট্টগ্রামের রাজনীতি নয়, ওনার মৃত্যু পুরো আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একটা বড় ধাক্কা। আমরা অমূল্য সম্পদ হারালাম।’ সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম বলেন, ‘চট্টগ্রামকে নিয়ে ওনার বড় স্বপ্ন ছিল। সমৃদ্ধ, উন্নত চট্টগ্রামের স্বপ্ন দেখতেন তিনি। ওনার শূন্যতা পূরণ হবে না।’ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘তিনি শুধু আমাদের দলের নেতা ছিলেন না, চট্টগ্রামবাসীর প্রকৃত বন্ধু ছিলেন।’
"