আদালত প্রতিবেদক ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১৭ আগস্ট, ২০১৭

হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ঠিকাদার কারাগারে

হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের মামলায় গ্রেফতার সুনামগঞ্জের যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার খাইরুল হুদা চপলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে চপলকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমেদ। এর আগে গত মঙ্গলবার বিদেশ যাওয়ার সময় রাতে ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চপলকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন। চপল সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক। জেলা শহরের স্টেশন রোডে মেসার্স নূর ট্রেডিং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার।

দুদকের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, রাতের একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর যেতে চপল বিমানবন্দরে এসেছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির রিমন বলেন, কৃষকের রুটি-রুজি নিয়ে যারা রাজনীতি করে, প্রতিপত্তি বানায়; তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। রাজনীতির জন্য এটা কালো অধ্যায়।

গত মার্চ-এপ্রিলের আগাম বন্যায় হাওরাঞ্চলে বাঁধ ভেঙে ফসলহানির ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে আসার পর বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের তদন্তে নামে দুদক। এরপর গত ২ জুলাই হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারসহ মোট ৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই দিনই মামলার আসামি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরখাস্তকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দীন ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইব্রাহিম ট্রেডার্স অ্যান্ড শামিম আহসানের স্বত্বাধিকারী মো. বাচ্চু মিয়াকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রতি বছর বন্যা আসার সময় ও আশঙ্কা সম্পর্কে অবহিত থাকার পরও আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বাঁধ নির্মাণের চুক্তি ভেঙেছেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়। এতে বলা হয়, চুক্তিতে ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের অসমাপ্ত ৮৪টি প্যাকেজের বাঁধ নির্মাণ শেষ করতে ঠিকাদারদের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে আর দরপত্র আহ্বান না করেই আগের ঠিকাদারদের ১৬০টি প্যাকেজে নতুন কাজ দেওয়া হয়। নতুন প্যাকেজের মধ্যে নয়টির কাজ শুরু না করে এবং ১৫১টি প্যাকেজের কাজ আংশিক সম্পন্ন করার মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশে অবৈধভাবে ভবিষ্যতে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন আসামিরা। এসব কারণে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও দন্ডবিধির ৪০৯, ১৬৬, ৫১১ ও ১০৯ ধারায় এই মামলা করা হয়েছে বলে দুদক উপপরিচালক প্রণব কুমার জানিয়েছিলেন।

মামলার আসামিদের মধ্যে ১৫ জন সিলেট বিভাগ ও সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা। বাকি ৪৬ জন ঠিকাদার। হাওরের বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের ১৬০টি প্যাকেজের মধ্যে পাঁচটি প্যাকেজে ঠিকাদারির দায়িত্ব পান স্টেশন রোডের মেসার্স নূর ট্রেডিংয়ের মালিক চপল।

মামলার এজাহারে বলা হয়, খাইরুল হুদা চপল ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬ ও ৬৭ নম্বর প্যাকেজে বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব পান। এর মধ্যে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৬৩, ৬৪ ও ৬৪ নম্বর প্যাকেজে কোনো কাজ হয়নি, তবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে যথাক্রমে ৩০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ ও ৫০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়। এ ছাড়া ৬৬ ও ৬৭ নম্বর প্যাকেজে যথাক্রমে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ২৯ ও ৪০ শতাংশ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫০ ও ৪০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist