ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
‘পিতৃ হত্যার প্রতিশোধ’ নিতে সৎভাইকে খুন!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় নিখোঁজের এক দিন পর সাইফুল মিয়া (১৩) নামের এক কিশোরের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৫ বছর আগে সংঘটিত নিজের বাবার খুনের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সাইফুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন সৎভাই সজীব। তাদের বাবা দুজন হলেও তারা একই মায়ের গর্ভের সন্তান।
গত বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বাহেরচর (বাড়াইলচর) গ্রামের ডোবা থেকে সাইফুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার তিনজনকে আসামি করে সাইফুলের বাবা ছালেক মিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে সাইফুল মিয়ার সৎভাই সজীব মিয়া (২০) ও তার বন্ধু জামিল হোসেনকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও নিহত কিশোরের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার বাহেরচর গ্রামের সাইফুল মিয়াকে ডাব খাওয়ানোর কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান তার সৎভাই সজীব মিয়া। গ্রামের পাশে পাটক্ষেতে নিয়ে তারা কাঁচা পাটের আঁশ দিয়ে সাইফুলের হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। পরে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে সাইফুলকে হত্যা করা হয়। লাশ গুম করতে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পাটক্ষেতের পাশে ডোবায় কচুরিপানার নিচে ফেলে দেওয়া হয়।
নিহত সাইফুল মিয়ার বাবা ছালেক মিয়া বলেন, গত বুধবার রাত ৯টার পর থেকে সাইফুলকে পাওয়া যাচ্ছিল না। জামিল হোসেনকে সন্দেহ হলে তাকে ধরে জিজ্ঞাসা করলে জামিল জানায় সজীব মিয়া সব জানে। পরে সজীব সব স্বীকার করেছে।
বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাব্বির রহমান বলেন, সাইফুলকে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার হওয়া সজীব মিয়া ও জামিল হোসেন। তাদের স্বীকারোক্তিতেই সাইফুলের বস্তাবন্দী লাশ ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সজীব মিয়া, জামিল হোসেন ও জুনাইদ মিয়াকে আসামি করে সাইফুলের বাবা ছালেক মিয়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
সাব্বির রহমান আরো বলেন, সজীব মিয়া ও সাইফুল মিয়ার মা একজন এবং তাদের বাবা আলাদা। সজীব জানিয়েছেন, তার বাবা একই গ্রামের গোলাম মোস্তফাকে তার সৎবাবা ও মা মিলে হত্যা করেছিল ১৫ বছর আগে। সেই ধারণা থেকে প্রতিশোধ নিতে সৎভাইকে হত্যা করা হয়েছে।
"