নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিনকে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের স্মরণ
পঁচাত্তরের রাজনৈতিক পালাবদলে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে কারাবরণ করা সদ্যপ্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদের প্রাপ্য পেনশনসহ অন্যান্য সুবিধাদী ফিরে পেতে তার পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম। গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিন আহমেদ স্মরণে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম আয়োজিত এক সভায় ফোরামের নেতারা এ আশ্বাস দেন।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিনকে সেনাবাহিনী থেকে অপসারণের বিষয়টি ‘রাজনৈতিক’ ছিল জানিয়ে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবিব বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি, অপসারণের পর পেনশন, আবাসন সুবিধাসহ অন্য যেসব সুবিধার জন্য তিনি অ্যাপ্রোচ করেননি কিন্তু তাই বলে তাকে সেসব দেওয়া হবে না-এটা অন্যায়।’ ফোরামের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ বলেন, ‘মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে কমিশন পেয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় সে সুন্দরবনে এককভাবে যুদ্ধ করেছে; পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ওই এলাকায় ভিড়তেই দেয়নি। আমার শুনে খুব খারাপ লাগছে যে, একজন মুক্তিযোদ্ধা তার প্রাপ্য পাবে না।’
মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর এম এ জলিলের অধীনে সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সুন্দরবন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্ব দেন মেজর জিয়াউদ্দিন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে প্রথমে ক্যাপ্টেন এবং পরে মেজর পদে উন্নীত হন। কর্নেল তাহেরের অনুসারী জিয়াউদ্দিন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর সুন্দরবনে আশ্রয় নেন। পরে সুন্দরবনে সেনা অভিযানে গ্রেফতার হন তিনি।
সামরিক আদালতের বিচারে দন্ডিত মেজর জিয়াউদ্দিন ১৯৮০ সালে ছাড়া পেয়ে সুন্দরবনের দুবলার চরে শুঁটকির ব্যবসা শুরু করেন। সামরিক বাহিনীতে আর ফিরে না আসার পাশাপাশি সেখান থেকে পেনশনসহ অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধাও চাননি। তবে এখনো পরিবারের সদস্যরা তার প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা দাবি করলে তা পাওয়া সম্ভব বলছেন সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ।
স্মরণসভায় অন্যদের মধ্যে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর জেনারেল (অব.) মো. আলী সিকদার উপস্থিত ছিলেন।
"