আরফাতুল মজিদ, কক্সবাজার

  ২৬ জুলাই, ২০১৭

অভিযানেও মানুষ সরছে না

চারদিন ধরে কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এমন বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। সোমবার গভীররাতেও পাহাড় ধসে চারজন মারা গেছেন। ঘটনাস্থলে গত চারদিনে তিনবার সচেতনতামূলক মাইকিং করেছেন কক্সবাজারের প্রশাসন। এসব ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে লোকজনকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরিয়ে নেওয়ার পরপরই ফের তারা নিজের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ফিরে যান।

কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) পঙ্কজ বড়–য়া বলেন, বিশাল একটি পাহাড়ের নিচেই তাদের বসবাস ছিল। এমনকি এই পাহাড়ের চারপাশে ১২টির মতো ঘরে শতাধিক লোকের বসবাস। সব গুলো ঘর রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, গত চারদিনে লাইট হাউজ এলাকায় তিনবার মাইকিং করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধও করা হয়েছে। অনুরোধের পর তারা সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। কিন্তু রাত বাড়ার সাথে সাথে তারা আশ্রয় কেন্দ্র পেলে নিজের ঘরে কৌশলে ফিরে আসে। বসবাসকারিরা কিছুতেই সরে যেতে চায় না। প্রশাসন গেলে তারা সরে যায়। আবার প্রশাসন আসলে; তারা আবার ঘরে ফিরে যায়। গত একমাসে লাইট হাউজ এলাকায় সাত বারের মতো অভিযান চালিয়ে সচেতন করা হয়েছিল। কিন্তু কেউ বিষয়টি সহজে আমলে নেয় না।

এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শহরের অধিকাংশ পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারিরা নিন্ম আয়ের মানুষ। অনেকেই আবার কেয়ার টেকার। পাহাড়ি জমি অবৈধভাবে দখলের জন্যও ঘর তৈরি করে রয়েছে অনেকেই। নিজের আশ্রয়ের আশায় শত শত রোহিঙ্গা ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের উপরে বা নিচে বসবাস করে যাচ্ছে। তবে এসব লোকজন চোরের আতংকে ভুগছে। আশ্রয় কেন্দ্রে বা নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার পরপরেই তাদের ঘরে চোরের দল হানা দেয় বলে জানা গেছে। ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। অনেক সময় এলাকার বখাটেরাও হানা দেয়। পাহাড়ের নিচে ঝুঁকি জেনেও এসব ভয়ে ঘর ছেড়ে যেতে চাই না পাহাড়িরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে শহরের খাজামঞ্জিল এলাকায় যান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুর রহমান ও সাইয়েমা হাসান। ওই এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা সেখানে যায়। এই সময় এলাকার সর্দ্দার জাকির হোসেন বলেন, চোর ও বখাটের ভয়ে ঘর ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চায় না মানুষ। সোমবার রাতে কয়েক শত লোকজনকে স্থানীয় আল আমিন কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে আশ্রয়ের জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু একদলকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে গেলে, আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করা একদল আবার ফিরে যায় নিজ ঘরে। কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতে চায় না। কিছুক্ষণ পরপরেই আশ্রয় কেন্দ্র থেকে চলে যায়। ঘরের হাড়ি-পাতিল ও মূল্যবান জিনিস পত্র চোরের দল নিয়ে যাওয়ার ভয়ে তারা আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করে না।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুর রহমান জানান, লোকজন যাতে বৃষ্টির মধ্যে ফের পাহাড়ের বাড়িতে উঠে না যায় সেই জন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে চোরের আতংকে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে নিজ ঘরে ফিরে যায় বলে শোনা যাচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist