লোহাগাড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
লোহাগাড়ায় নওমুসলিম পরিবারের ওপর নির্যাতন
উচ্চৈঃস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করায় আত্মীয়-স্বজনের কাছে নাজেহাল হয়েছেন একজন নওমুসলিম গৃহবধূর মেয়ে; তার পরিবারের ওপর নেমে এসেছে নির্যাতনের খড়্গ। ওই পরিবারের একজন শিক্ষার্থীকেও মারধর করা হয়েছে। গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নড়াইলের লোহাগাড়ার চরমল্লিকপুর গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। আহত নুসরাত নাজনীন তন্দ্রাকে (২৪) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, লোহাগাড়ার চরমল্লিকপুর গ্রামের মো. নাজিম উদ্দিন রাঙামাটি এলাকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর একজন নারীকে বিয়ে করেন। ওই নারী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বর্তমানে জেসমিন আক্তার নামে পরিচিত। বিয়ের পর নিজাম তার পরিবার নিয়ে প্রায় ২৫ বছর ধরে চট্টগ্রামে বসবাস করে আসছেন। চলতি বছর স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে চরমল্লিকপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন নাজিম। কিন্তু নাজিম উদ্দিনের ভাই দিদার শেখসহ আত্মীয়-স্বজনরা তার বাড়িফেরাকে মেনে নিতে পারেননি। এরপর থেকেই তারা বিভিন্নভাবে নাজিমের পরিবারকে উক্ত্যক্ত করে আসছেন।
নিজাম উদ্দিন বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে নিরাপত্তা শাখায় কর্মরত। তিনি চাকরির কারণে চট্টগ্রামে থাকলেও বর্তমানে চরমল্লিকপুর গ্রামে তার স্ত্রী জেসমিন দুই সন্তান নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দিদার শেখের ঘরে উচ্চৈঃস্বরে গান বাজতে থাকলে জেসমিন নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দিদারের ছেলে সজীব, মেয়ে রিমি ও ঝিমি, স্ত্রী রাশিদ, নিজাম এবং নাঈমসহ কয়েকজন নুসরাত নাজনীন তন্দ্রার ঘরে ঢুকে তাকে বেধড়ক মারধর করে। পরে তাকে স্থানীয়রা হাসপাতালে ভর্তি করে। জেসমিন আক্তারের অভিযোগ, মারধর করার পর নাঈমসহ কয়েকজন হুমকি দিয়ে বলেন, ‘যদি মামলা করিস, তাহলে মা-মেয়েকে পতিতা সাজিয়ে পুলিশে দেবো।’
কয়েকদিন আগে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের উত্ত্যক্ত করার ব্যাপারে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন বলেও জানান তিনি। থানায় অভিযোগ করার পর থেকে দিদারের পরিবার আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ঘটনা শুনে এসআই কেএম জাফর আলীকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। ভুক্তভোগীরা মামলা (এজাহার) করলে ব্যবস্থা নেবো।’
"