নিজস্ব প্রতিবেদক
রিজভীর মন্তব্য
প্রধানমন্ত্রী লাশের স্তূপ ডিঙিয়ে আনন্দ ভ্রমণে
পাহাড়ধসে প্রাণহানির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুইডেন সফর নিয়ে সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তার দাবি, প্রধানমন্ত্রী লাশের স্তূপ ডিঙিয়ে এখন আনন্দ ভ্রমণে রয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ দাবি করেন। তিনি বলেন, দেশে কোনো দুর্যোগ হলে অন্য দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা বিদেশ সফর বাতিল করে নিজ দেশে উপদ্রুত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান।
সুইডেনে ১৫ ও ১৬ জুন দুই দিনের আনুষ্ঠানিকতাকে সামনে রেখে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর একই দিন ভোরে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও বান্দরবানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। সকালে মৃতের সংখ্যা কম থাকলেও রাতে বেড়ে ১২৫-এ দাঁড়ায়। পরে গতকাল সকালে সংখ্যাটি আরো বাড়তে থাকে।
রিজভী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতবিক্ষত দুর্গত মানুষ এবং অসংখ্য লাশের স্তূপকে ডিঙিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী এখন আনন্দ ভ্রমণে সুইডেন সফরে বেরিয়েছেন। ঠিক যেমনিভাবে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আঘাত হানার সময় তিনি অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা সফর করছিলেন। বিপদের সময় নিজ দেশের জনগণকে ফেলে চলে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য ও ইতিহাস বলেও দাবি করেন বিএনপি নেতা।
তার দাবি, ১৯৭১ সালেও আওয়ামী লীগ একই কাজ করেছে। ১/১১-এর সময়ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সেই ‘ট্র্যাডিশন’ রক্ষা করেছেন।
রিজভীর অভিযোগ, প্রশাসনের অবহেলায় চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি ঢলে মারাত্মক মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। দুর্গত মানুষ এখন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় পাচ্ছে না। বিএনপি নেতা বলেন, সেখানকার অবস্থা ক্রমেই বেহাল হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা মুখে উন্নয়নের কথা প্রচার করলেও চট্টগ্রাম ও পার্বত্য এলাকার অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়নই হয়নি। ওই এলাকায় দুর্গত মানুষদের প্রতি সরকারের ‘অবহেলার’ কারণে জনগণ ক্ষুব্ধ বলে মন্তব্য করে রিজভী বিএনপি নেতাকর্মীদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীনরা মুখে তুবড়ি ছুটিয়ে উন্নয়নের কথা প্রচার করে। কিন্তু চট্টগ্রাম, বান্দরবান, রাঙামাটিতে অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়নই হয়নি বলেই দুই দিনের প্রবল বর্ষণে মাটিচাপায় অসংখ্য মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। তিনি বলেন, ওই সব এলাকায় উন্নত রাস্তাঘাট নেই। নেই বিদ্যুৎ। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনায় আগাম বার্তা জানানোর কোনো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নেই, ল্যান্ডস্লাইডকে মোকাবিলা করে বিপন্ন মানুষকে উদ্ধারের জন্য নেই কোনো উন্নত মানের উদ্ধার-টিম কাঠামো। সেখানে সম্ভাব্য ল্যান্ডস্লাইড এলাকাগুলো এড়িয়ে রাস্তাঘাট ও লোকবসতি তৈরি হয়নি বলেই এই ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসে এত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
"