প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২০ জানুয়ারি, ২০১৭

ডাভোসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী

সুন্দরবনের ক্ষতি করবে না রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র

সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভায় এক আলোচনায় বাংলাদেশের সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুন্দরবন ও আশপাশের এলাকার পরিবেশ রক্ষা করেই এই কেন্দ্র করা হচ্ছে। বুধবার ডাভোসের কংগ্রেস সেন্টারে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘লিডিং দ্য ফাইট এগেইনস্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক প্ল্যানারি সেশনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রশ্ন তোলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পরিবেশ অ্যাক্টিভিস্ট আল গোর।

প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রামপাল নিয়ে আলোচনা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের প্রান্তসীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে এবং বিশ্ব ঐতিহ্য থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে ক্লিন কোল ও আধুনিক প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র করছি আমরা।...সুন্দরবন ও আশপাশের ওই এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফর করে রামপালে কী হচ্ছে তা ‘নিজ চোখে’ দেখার প্রস্তাব দেন বলে জানান উপ-প্রেসসচিব।

বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ চলছে। সুন্দরবনের কাছে হওয়ার কারণ দেখিয়ে শুরু থেকেই এ কেন্দ্রটির বিরোধিতা করছে বামপন্থি কয়েকটি সংগঠন। পরিবেশবাদীরা বলছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের পরিবেশ-প্রতিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। শুরু থেকেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধী আন্দোলনে রয়েছে তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। দাবি আদায়ে তারা ২৬ জানুয়ারি হরতাল কর্মসূচি রেখেছে। তবে সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী এর আগেও বিভিন্ন বক্তব্যে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বলেছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।

নজরুল ইসলাম জানান, ‘ডাভোসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একটি গোষ্ঠী রামপাল নিয়ে অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরি করছে।...কেন ও কী ক্ষতি করবেÑএ ধরনের যুক্তিসংগত তথ্য তারা উপস্থাপন করতে পারেনি। তাদের ওখানে পরিদর্শন করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তাতেও তারা সাড়া দেয়নি। তাদের মনে হয়তো অন্য কোনো অভিপ্রায় আছে।’ শেখ হাসিনা আশ্বস্ত করে বলেন, ‘কোনো ধরনের ক্ষতির যদি আশঙ্কা থাকে, তাহলে আমি নিজেই সে ধরনের কোনো প্রকল্পের অনুমতি দেব না।’

আলোচনার এক পর্যায়ে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় ‘জনবসতিপূর্ণ ও কৃষিজমি’ এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় দেড় দশকে ওখানে কৃষিরও কোনো ক্ষতি হয়নি। পরিবেশেরও কোনো ক্ষতি হয়নি, ওখানকার মানুষেরও ক্ষতি হয়নি।’ শেখ হাসিনা বলেন, বড়পুকুরিয়া সাব-ক্রিটিক্যাল। আর রামপালে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির। এ সময় তিনি দুই প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্যও তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে তারা যখন সরকারে আসেন তখন দেশে বনভূমি ছিল মাত্র সাত শতাংশ। সেটা এখন বেড়ে ১৭ শতাংশ করা হয়েছে। লক্ষ্য রয়েছে ২৫ শতাংশ করার। এই সেশনে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইরনা সোলবার্গ, এইচএসবিসি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট গালিভার, কফকো এগ্রির প্রধান নির্বাহী জিঙতাও চি প্রমুখ অংশ নেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist