নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ জুলাই, ২০২০

রাজধানীর তুরাগে জমি দখলের অভিযোগ

রাজধানীর উত্তরায় অবৈধভাবে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগকারী মো. আযষুল বারেক রাজউক তৃতীয় প্রকল্প উত্তরা ১৭নং সেক্টর রোড নং- ৬/সি (এক্সটেনশন), ব্লক জি-১ সংলগ্ন তুরাগ থানাধীন তাফালিয়া এলাকায় মো. কামাল মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জমি অবৈধ দখলের অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, উত্তরা সাবরেজিষ্ট্রি অফিস অধীন ঢাকা কালেক্টরীর ৯৭২০নং তৌজিভুক্ত ‘বাউনিয়া’ মৌজাস্থিত সিটি জরিপ ২৩০২৭ ও ২০৩৪১ নং দাগে মোট ৩৫৫ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মৃত মো. আনসার আলী মুন্সি ও তার স্ত্রী মৃত মোসা. ফালানি বিবি। তাদের মৃত্যুর পর ওয়ারিশ সূত্রে ওই জমির সমান অংশীদার হন মৃত মো. আনসার আলী মুন্সি ও স্ত্রী মৃত মোসা. ফালানি বিবি দম্পতির তিন কন্যা যথাক্রমে তারা বানু, গোলাপ বানু ও নূর বানু। সেই অনুযায়ী ওই সম্পত্তির দক্ষিণের অংশ তারা বানু, মাঝের অংশ গোলাপ বানু ও উত্তরের অংশ নূর বানু সমানভাগে ভোগদখল করে আসছিলেন। তারা বানুর মৃত্যুর পর তার তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে ওয়ারিশ সূত্রে তার ভোগকৃত সম্পত্তির মালিক হন।

তারা বানুর ওয়ারিশরা জমির মালিকানা বুঝে পাওয়ার পর নিজেদের অংশ বিক্রি করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে মৃত তারা বানুর ওয়ারিশান মো. রফিকুল ইসলাম নূর বানুর ভাগের অংশ নিজের উল্লেখ করে মো. ইসহাক নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রির নাম করে বায়না বাবদ ৭০ লাখ টাকা আদায় করেন। অথচ দীর্ঘদিন ধরে জমিটি ভোগ দখল করে আসা মো. আবদুল বারেক জানান, রফিকুল ইসলাম আগে নিজেদের ভাগের অংশ বিক্রি করে আমার মায়ের (নূর বানু) অংশের জায়গা নিজের উল্লেখ করে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। বিগত কয়েক বছর ধরে মো. রফিকুল ইসলামের পরামর্শে মো. ইসহাক স্থানীয় মো. কামাল গংকে সঙ্গে নিয়ে জায়গাটিকে অবৈধভাবে দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা রাতের অন্ধকারে এসে আমাদের জায়গায় বাঁশের খুঁটি স্থাপন করে সীমানা নির্ধারণ করেছে। এ নিয়ে ২০১৯ সালে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা বাঁধা দিলে মো. কামাল গং নিজেকে বায়নাসূত্রে ওই জমির মালিক দাবি করে আমাকে মারধরে উদ্যত হয়, আমার ছেলেকে মেরে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি এমনকি আমাকেও প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ব্যাপারে ওই বছরই আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করি (যার নং-৪৬৭) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা করি।

ভুক্তভোগীর এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিবাদী পক্ষের লোকজন বালু ফেলে জায়গাটির দখল নেওয়ার চেষ্টায় রাস্তা পরিষ্কার করছে। এমন সময় জমির মালিক ও ভোগদখলকারী আবদুল বারেক সেখানে উপস্থিত হওয়া মাত্রই অপ-তৎপরতাকারীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। মৃত মো. আনসার আলী মুন্সি ও স্ত্রী মৃত মোসা. ফালানি বিবি দম্পতির ওই সম্পত্তির উত্তরের অংশে গিয়ে দেখা যায় জায়গাটির উত্তর-পশ্চিম কর্ণারের একটি অংশজুড়ে বাঁশের প্রাচীর দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ওই সীমানায় নির্মিত টিনের ঘরের সামনে অবস্থিত সাইন বোর্ডে বায়নাসূত্রে জায়গার মালিক হিসেবে মো. কামাল হোসেন গংয়ের নাম উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে বায়না সূত্রে জমির মালিক দাবি করা মো. কামাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ করলে সেখানেও তাকে পাওয়া যায়নি। অপরদিকে জায়গাটি রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে বায়না সূত্রে ক্রেতা দাবিদার মো. ইসহাকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেয়ে ‘পরে কথা বলব’ এই বলে তিনি ফোন রেখে দেন। একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। অপরদিকে ওই জমি বিক্রেতা রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে কল করলে, তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তুরাগ থানার এএসআই আশিফুর রহমানের কাছে জায়গাটির চলমান সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কার্য সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close