নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ জুন, ২০২০

সরকার নির্ধারিত মূল্য ধান-চাল ক্রয়ে অবৈধ কার্ড বাতিল হচ্ছে

এবার সরকার নির্ধারিত দামের বাইরে ধান ও চাল কেনা হবে না। তাই গুদামের মজুদ বাড়াতে খাদ?্য ক্রয়ে গতি বাড়াতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অবৈধ কার্ড বাতিলে শক্ত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছে। গতকাল বুধবার মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন থেকে বরিশাল বিভাগের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে খাদ?্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এসব কথা বলেন। সভায় সমন্বয় ও সঞ্চালনা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।

সভায় মন্ত্রী বলেন, সরকারের সঠিক দিকনির্দেশনা এবং তত্ত্বাবধানে এবার কৃষক বোরোতে বাম্পার ফলনে ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে। এই বাজারদর ধরে রাখতে সরকারি সংগ্রহের গতি বাড়াতে হবে। এছাড়া নির্দেশ মোতাবেক খাদ্যশস্যের মান যাচাই করে সংগ্রহ করতে হবে। ধান-চাল কেনায় কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুশিয়ারি দেন। চালকল মালিকদের উদ্দেশে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসুন; প্রতি বছর সমান লাভ হয় না; এবার করোনাকালীন মানুষকে সেবা করার উপযুক্ত সময়, সেবার মনমানসিকতা নিয়ে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, আপনারা সরকারের তালিকাভুক্ত; সবসময় সরকার আপনাদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করে এবং এবারও আপনারা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। চালকল মালিকদের চুক্তি মোতাবেক সঠিক সময়ে চাল দেওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, সরকার সব ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দিচ্ছে; অতএব সেই প্রণোদনার অংশীদারত্বের সুযোগ আপনারাও নিতে পারবেন। সরকারিভাবে চালের মূল্য বৃদ্ধি করা কোনোভাবেই হবে না জানান খাদ্যমন্ত্রী।

চাল সরবরাহের সময় খাদ্য গুদামের নাম, তারিখ এবং কোন খাতে (খাদ্যবান্ধব, ওএমএস, টিআর, কাবিখা ) এটা স্পষ্ট স্টেনসিলের মাধ্যমে অমোচনীয় কালি দারা লিখতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য অধিদফতর এবং এর মাঠ পর্যায়ের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, ওসিএলএসডিসহ সব কর্মচারী অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এজন্য মন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ধান চাল সংগ্রহের সময় কোনো কৃষক বা মিলারের সঙ্গে অসদাচরণ করবেন না; দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হবেন না।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কথা তুলে ধরে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের তালিকা নিয়ে কিছু অভিযোগ আসায় প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে চিঠি দেয়া হয়েছিল অতি দ্রুত যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত গরিব ও দুস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে তালিকা প্রেরণ করার। এজন্য যেকোনো প্রকার হুমকি-ধামকিকে ভয় না করে; স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে থেকে প্রকৃত গরিব ও দুঃস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত করার। তিনি প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় অতীতে তালিকা তৈরি করার সময়ে যে ট্যাগ অফিসার ছিলেন তাদের সরিয়ে নতুন করে কোনো ট্যাগ অফিসারকে দায়িত্ব দিয়ে হালনাগাদ করে নতুন তালিকা প্রণয়ন করার নির্দেশ দেন। ভিডিও কনফারেন্সে বরিশাল বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার করোনা মোকাবিলা পরিস্থিতি, চলতি বোরো ধান কাটা-মাড়াই, সরকারিভাবে ধান চাল সংগ্রহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মন্ত্রী। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের প্রকিউরমেন্ট যেন কৃষকবান্ধব প্রকিউরমেন্ট হয়। চালের মান নিয়ে কোনো আপস নেই। তিনি বলেন, কোনো কৃষক যেন তার স্লিপ মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি না করেন। ভিডিও কনফারেন্সে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, বরিশাল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসকরা এবং বরিশাল বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা বক্তব্য দেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close