শাহ আলম, খুলনা

  ১৩ এপ্রিল, ২০২০

কষ্টে আছেন খুলনার পাটকল শ্রমিকরা

খাঁ-খাঁ রদ্দুর। তপ্ত রোদে পুড়ছে শরীর। এরই মধ্যে খুলনার খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের দৌলতপুর জুটমিলের সামনে জটলা করেছেন ৩০ থেকে ৪০ জন পাটকল শ্রমিক। মলিন মুখ। হাতে ভোটার আইডি কার্ড উঁকি-ঝুঁকি মারছে। কারণ কেউ ত্রাণ দিতে আসে কিনা। এই শ্রমিকরা নিত্যপণ্যের অভাবে কষ্টে আছেন বলে জানিয়েছে।

গত বুধবার কথা হয় প্লাটিনাম জুটমিলের শ্রমিক কামাল হোসেনের (৩৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার পাটকলে ছুটি ঘোষণা করে। ছুটির আগে বকেয়া এক সপ্তাহের মজুরি দেওয়া হয়। এখনো ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। এ অবস্থায় হাতে কোনো টাকা নেই। তিনি জানান, মুদি দোকানে ১৩ হাজার টাকা বাকি পড়েছে। এখন আর দোকানি বাকিতে চাল-ডাল দিচ্ছেন না। তিন ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে অভুক্ত থাকার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে।

একই মিলের শ্রমিক নেছার উদ্দিন খান বলেন, মিল বন্ধ, বকেয়া মজুরিও দিচ্ছে না। সে কারণে ভোটার আইডি কার্ড সঙ্গে নিয়ে বাইরে বেরিয়েছেন, যদি কেউ ত্রাণ দেয়। শুধু কামাল হোসেন বা নেছার উদ্দিন খানই নন; খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের প্রায় ৯ হাজার শ্রমিক পরিবারে দেখা দিয়েছে অভাব-অনটন। হাতে টাকা না থাকায় তাদের দিন কাটছে খুবই কষ্টে। মিলগুলোতে ১১ থেকে ১২ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে।

কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে বিআইডিসি সড়কে প্লাটিনাম জুটমিল গেটের সামনে দাঁড়াতেই কয়েকজন এসে জড়ো হন। সেখানে কোনো সহায়তা প্রদান করা হবে কিনা, এ প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান তারা। এ সময় তাদের থেকে সোহেল শেখ বলেন, আগে প্লাটিনাম জুটমিলে বদলি শ্রমিকদের কাজ করতাম। মিল চালু থাকলে কাজ হলে দৈনিক ভিত্তিতে মজুরি পেতেন। কিন্তু মিল বন্ধ, তাই তার আয়ও বন্ধ। পরে মিলের সামনে চায়ের দোকান চালাতেন। এখন চায়ের দোকানও বন্ধ। অথচ খরচ থেমে নেই। তিনি বলেন, মা-বাবা ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। দোকান বন্ধ তারপরও দোকান মালিককে মাস শেষে ভাড়া দিতে হবে। কীভাবে চলব বুঝতে পারছি না, কেউ সহায়তাও করছে না।

ক্রিসেন্ট জুটমিলের শ্রমিক মো. ইউনুস জানান, ঘরে বাজার নেই, চাল-ডাল কেনার কোনো টাকাও নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close