নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৫ এপ্রিল, ২০২০

বিএনপির তহবিল প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান আ.লীগের

করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে বিএনপির ৮৭ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দেশের অর্থনীতির সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার এই প্রস্তাব সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

গতকাল শনিবার বিকালে সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুরে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সরকারের কাছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের এই সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো দায়িত্বশীল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যখন দায়িত্ব ও কা-জ্ঞানহীনভাবে বক্তব্য রাখেন, তখন জাতি হতাশ হয়। তার বক্তব্য আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়া একজন দিশাহারা রাজনীতিকের অসংলগ্ন প্রলাপ ও ব্যর্থতার বেসামাল বহিঃপ্রকাশ। সারা বিশ্বে সব মানুষ একযোগে যখন এই সংকট মোকাবিলায় এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছে, তখন অর্বাচীনের মতো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাখা বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্ত করে। তাদের এই বালখিল্যতার কারণে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন তা আমাদের অর্থনীতির ঊর্ধ্বগামী সম্ভাবনার বিপরীত। এই ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য জনগণকে শুধু হতাশই করতে পারে। এডিবির এক অর্থনীতিবিদ যেখানে বলেছেন, এই সংকটের মধ্যেও এশিয়ায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ হবে, সেখানে অর্থনীতির এই সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার এই প্রস্তাব সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই সংকটে আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও সম্ভাবনা বিচার বিশ্লেষণ করে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের কল্যাণে কর্মসূচি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করে চলেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পরিকল্পনায় সারা বিশ্ব যেখানে সম্ভাবনার নতুন সূর্যোদয় দেখে, সেখানে মির্জা ফখরুল ইসলামরা বরাবরের মতো মুখ ঘুরিয়ে রাখেন অন্ধকারের দিকে। জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত বিএনপি কখনোই আলোর পথে আসতে চায় না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণকে সচেতন করে গড়ে তোলার মাধ্যমে জনগণের সম্মিলিত প্রয়াস নিয়েই এই সংকট মোকাবিলা করবে।’ তিনি বলেন, ‘দুর্যোগের এই মুহূর্তে বিভেদ নয়, এটা তাদের বোধগম্য নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জনগণকে সতর্ক, সচেতন ও দায়িত্বশীল করার কাজ করে চলেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই একটি গাইডলাইন প্রস্তুত করে রেখেছেন এবং এই ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতন ও দায়িত্বশীল জনগণকে প্রধান নিয়ামক ধরে সম্মিলিত প্রয়াস গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন।

সারা বিশ্বের নেতারা করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে দোষারোপের রাজনীতি পরিহার করার সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেখানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা ও তাদের দল এই সংকটকে ঘনীভূত করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনগণের ঐক্যের দুর্গকে নস্যাৎ করতে চায়।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রতিদিন সারা দেশে কমপক্ষে ১০০০ এবং প্রতিটি উপজেলায় দুটি করে নমুনা পরীক্ষার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণে অন্য দেশের তুলনায় নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হওয়ায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা ব্যথিত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে হয়তো তারা খুশি হতেন। মৃত্যুর হার নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে মন্তব্য করেছেন সেটা থেকে প্রমাণিত হয় তিনি গণিতের সাধারণ সূত্রই জানেন না। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম বলেই সেখানে মৃত্যুর হার বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close