কলকাতা প্রতিনিধি

  ২৯ মার্চ, ২০২০

করোনা থেকে বাঁচতে মাস্কের পরিবর্তে গামছা

করোনা সংক্রমণ রুখতে মাস্কের বিকল্পের সন্ধান দিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। করোনার সংক্রমণ রুখতে যে মাস্কটির কথা বলা হচ্ছে সেই এন-৯৫ মাস্ক বাজারে প্রায় অমিল। এই অবস্থায় টুইটারে এক ভিডিওতে বিপ্লব দেব দেখিয়েছেন গামছাকে কেমন করে ব্যবহার করা যেতে পারে মাস্ক হিসেবে।

ত্রিপুরার বাসিন্দাদের উদ্দেশে তিনি জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় মাস্কের পরিবর্তে গামছাকে ব্যবহার করা যায়। তিনি নিজে তার মুখ গামছায় ঢেকে সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেমন করে গামছাটিকে ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেছেন, গামছা সবারই কাছে থাকে। কলকাতা ও গুয়াহাটি থেকে মাস্ক আসতে সময় লাগতে পারে। সেই সময় গামছাকে মুখে জড়িয়ে দেখার কথা বলেছেন তিনি। ওই ভিডিওতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গেছে, দেশে এই লকডাউন চলার সময় গামছা মুখ থেকে নামাবেন না। এটা ত্রিপুরার ঘরে ঘরে ব্যবহৃত হয়, এটাকেই রেডিমেড মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

বস্তুত ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কতটা ছড়াচ্ছে, তা বুঝতে আগামী ৭ থেকে ১০ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা সংক্রমিত রোগীর উপসর্গ সংক্রমণের পাঁচ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ফুটে উঠে। সে ক্ষেত্রে গত রোববার জনতা কার্ফুর দিন থেকে দেশবাসীর একটা বড় অংশ ঘরবন্দি। যাদের মধ্যে অনেকেই সংক্রমিত হলেও তাদের দেহে তখনো উপসর্গ দেখা যায়নি। সেই সংখ্যা ঠিক কত, তা আগামী এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বোঝা যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। লকডাউনের মাধ্যমে ভারত করোনা সংক্রমণ রুখতে আদৌ সাফল্য পেল কিনা, তা-ও ওই সময়ের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে করোনাভাইরাসের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন আগামী কয়েক দিন গুরুত্বপূর্ণ, তার ব্যাখ্যায় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আশপাশে অনেক ব্যক্তিই ওই ভাইরাসে আক্রান্ত বা রোগটির ক্যারিয়ার, কিন্তু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় তাদের দেহে উপসর্গ দেখা যায়নি। সেই ব্যক্তিরা অজান্তেই গত দুই সপ্তাহে যাদের সংক্রমিত করেছেন, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে উপসর্গ ফুটে ওঠার কথা। কেন না ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে করোনা আক্রান্তদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে সাত থেকে ১০ দিনের মাথায়। তাই রক্ত পরীক্ষাও পাঁচ থেকে ১২ দিনের মাথায় করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে ২১ দিন লকডাউনের নিয়ম মানলে ওই সংক্রমণ অনেকটাই রোখা যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, করোনাভাইরাস রোখার প্রশ্নে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো গোষ্ঠী সংক্রমণ রোখা। কারণ একবার গোষ্ঠী পর্যায়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে, তা আটকানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। যেমন হয়েছে ইটালিতে। ভারতে স্টেজ-থ্রি বা গোষ্ঠী সংক্রমণ আটকাতেই গোটা দেশে লকডাউনের ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। এর মধ্যেই লকডাউনের জেরে দেশে খাদ্যশস্যের কোনো অভাব যাতে না হয়, সেই কারণে কৃষিকাজকে এর আওতা থেকে বাদ রাখা হলো। কৃষি সম্পর্কিত যাবতীয় কাজ একই রকমভাবে চলবে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close